দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের ব্যবহার কি হার্টের জন্য ক্ষতিকর?

আজকের দিনে স্মার্টফোন ও অন্যান্য ডিভাইস আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। সকালে উঠে রাত ঘুমোতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত স্ক্রিনের সঙ্গে থাকা যেন অপরিহার্য। বন্ধু ও পরিবারে সঙ্গে সময় কাটানো কিংবা প্রিয় দলের খেলা সরাসরি দেখা সব এখন মাত্র একটি ট্যাপ করলেই সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের সামনে বসে থাকা আমাদের হৃদরোগসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
হিন্দুস্তান টাইমস থেকে জানা যায়, হরাইজন প্রাইম হাসপাতালের থানে-এর কনসালট্যান্ট ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. সুহেইল ধানসে জানিয়েছেন, দীর্ঘ স্ক্রিন টাইমের অভ্যাস শরীরের জন্য ক্ষতিকর, বিশেষ করে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় স্ক্রিন ব্যবহার করলে একই ভঙ্গিতে অনেক সময় বসে থাকা হয়। সেই সঙ্গে খাবার খাওয়ার সময়েও মনযোগ থাকে না আর রাত জাগার ব্যপারটা তো আছেই। সব মিলিয়ে হৃদরোগের গুরুতর ঝুঁকি তৈরি হয়।
প্রাথমিক সতর্কতা চিহ্ন: ডা. ধানসে জানিয়েছেন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়লে শরীরে লক্ষণ প্রকাশ পায়। প্রাথমিক সতর্কতার লক্ষণগুলো বুঝতে পারলে সাবধান হওয়া যায়। যে বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে সেগুলো হলো: ক্লান্তি, মাথা ও ঘাড়ে ব্যথা, অনিয়মিত ঘুম, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া এবং হঠাৎ কোনও কারণ ছাড়াই উদ্বেগ। রাতের ব্লু লাইট শরীরের ঘড়ি বিঘ্নিত করে, যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বৃদ্ধি এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা সৃষ্টি হয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
হৃদযন্ত্রের জন্য ঝুঁকি: দীর্ঘ সময় অচল থাকা রক্ত সঞ্চালনা কমায়, যা ডিপ ভেইন ক্লট-এর ঝুঁকি বাড়ায়। স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হৃদরোগ ও স্ট্রোকের প্রধান কারণ। অতিরিক্ত চাপ ও ঘুমের অভাব অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন
ঘটাতে পারে। গবেষণা দেখিয়েছে, যারা দিনে ৪-৬ ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন ব্যবহার করেন, তারা মেটাবলিক সিন্ড্রোম-এর ঝুঁকিতে থাকেন, যা সরাসরি করোনারি আর্টারি ডিজিজের সম্ভাবনা বাড়ায়।
প্রতিরোধের উপায়: ডা. ধানসে বলেন, প্রতি ৩০-৪০ মিনিট অন্তর ছোট বিরতি নিন, স্ট্রেচ করুন, চলাফেরা করুন। ভালো ঘুমের জন্য রাতে স্ক্রিন ব্যবহার সীমিত করুন। এছাড়াও সুস্থ থাকতে সুষম খাবার, ব্যয়াম এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।
Comments