সাইবার হামলা লন্ডনে, ১৮ নার্সারি স্কুলের ৮ হাজারের বেশি শিশুর তথ্য চুরি

লন্ডনে সাইবার হামলা চালিয়ে ১৮টি নার্সারি স্কুলের ৮ হাজারেরও বেশি শিশুর তথ্য চুরি করেছে রেডিয়েন্ট নামের একটি হ্যাকার গ্রুপ। নিজেদের ডার্ক ওয়েব পোর্টালে দায় স্বীকার করে এ তথ্য জানিয়েছে হ্যাকার গ্রুপটি। প্রমাণ হিসেবে ১০ জন শিশুর নাম, ছবি, বাড়ির ঠিকানা এবং পরিবার বিষয়ক তথ্য ডার্ক ওয়েব পোর্টালে প্রকাশ করেছে রেডিয়েন্ট। সেই সঙ্গে এক বিবৃতিতে গ্রুপটি বলেছে, "পরবর্তী ধাপ হিসেবে আরও ৩০ জন শিশু এবং নার্সারি স্কুলগুলোতে কর্মরত ১০০ স্টাফের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করব আমরা।"
যে ১৮টি স্কুলের শিশুদের তথ্য চুরি হয়েছে, সেই স্কুলগুলো যুক্তরাজ্যভিত্তিক নার্সারি স্কুল এবং ডে কেয়ার সেন্টার পরিষেবা প্রদানকারী জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান কিডো ইন্টারন্যাশনালের। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে কিডো ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু কোম্পানির কোনো কর্মকর্তা সাড়া দেননি।
তবে রেডিয়েন্ট হ্যাকার গ্রুপ সাড়া দিয়েছে। গোপন মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে গ্রুপের হ্যাকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। হ্যাকাররা জানিয়েছে, তারা গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কিডো ইন্টারন্যাশনালের নেটওয়ার্কের ভেতরে ছিল।
রয়টার্সকে হ্যাকাররা আরও জানিয়েছে, কিডো ইন্টারন্যাশনালের কাছে তারা অর্থ চেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি যদি তাদের চাহিদামতো অর্থ পরিশোধ না করে, তাহলে পর্যায়ক্রমে এই ৮ হাজার শিশু এবং প্রতিষ্ঠানটির সব কর্মীর ব্যক্তিগত তথ্য তারা ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ করবে।
তবে কী পরিমাণ অর্থ চেয়েছে, তা রয়টার্সকে জানায়নি হ্যাকাররা। তারা কোন দেশের নাগরিক— এমন প্রশ্নের জবাবে হ্যাকাররা দাবি করেছে যে তারা রাশিয়ার নাগরিক এবং রাশিয়াতেই থাকে। তবে এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ হ্যাকার দেয়নি।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের (মেট) তরফ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মেট পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
"আমাদের তদন্ত বর্তমানে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যায়ে আছে। এখনও কাউকে গ্রেপ্তা করা হয়নি" বলা হয়েছে মেট পুলিশের বিবৃতিতে।
চলতি বছর লন্ডনে বেশ কিছু সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই হামলার পর ভিকটিম প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ দাবি করেছে হ্যাকাররা।
যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থঅ জিসিএইচকিউ স্পাই এজেন্সির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টারের কর্মকর্তা জোনাথন এলিসন, "সাইবার অপরাধীরা যদি অর্থের সম্ভাবনা দেখে, তাহলে যে কাউকে তারা নিজেদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে। তবে অর্থের জন্য শিশুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা খুবই জঘন্য একটি কাজ।"
Comments