মাদ্রাসায় পূজার ছুটি ‘শরিয়তবিরোধী’, বাতিলের আবেদন

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। মাদরাসায়ও দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুদিনের ছুটি রয়েছে। তবে এ ছুটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন মাদরাসার কিছু শিক্ষক ও অভিভাবক।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে জমা দেওয়া এক আবেদনে মাদরাসায় দুর্গাপূজার সরকারি এ ছুটি বাতিলের দাবি জানান তারা।
লিখিত আবেদনে শিক্ষক ও অভিভাবকরা উল্লেখ করেছেন, বিগত সরকার আলিয়া মাদরাসার ওপর অনেক ইসলামবিরোধী সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছিল। তার অন্যতম একটি হচ্ছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছুটি মাদরাসার ওপর চাপিয়ে দেওয়া, যা ইসলামী শরিয়তের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। আমরা অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানের প্রতি কোনো অসম্মান না করে বলতে চাই, তারা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করবে এবং ছুটি ভোগ করবে এটাই স্বাভাবিক। এটা তাদের মৌলিক অধিকার।
'কিন্তু মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থায় যেহেতু কোনো ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী নেই, সেহেতু এ সংক্রান্ত ছুটি মাদরাসার জন্য অমূলক। যদি কোনো আলিয়া মাদরাসায় ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষক থাকেন, তবে তিনি তার ধর্মীয় ছুটি ভোগ করতেই পারেন, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আলিয়া মাদরাসার সব শিক্ষার্থীর ওপর এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া শরিয়তবিরোধী।'
আবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের এমন অনেক স্বনামধন্য আলিয়া মাদরাসা রয়েছে, যেখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীও নেই। যেমন- তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা, দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা, আল-ফারুক ক্যাডেট মাদরাসা। এজন্য আলিয়া মাদরাসায় অন্য ধর্মাবলম্বীদের ছুটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। বিশেষ করে আসন্ন দুর্গাপূজাসহ ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সব ছুটি বাতিল করে মাদরাসা খোলা রাখার জন্য দাবি জানাচ্ছি।'
লিখিত আবেদনে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে সই করেছেন সিরাজগঞ্জের আল-ফারুক ক্যাডেট মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন। অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে সই করেন তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা টঙ্গীর আলিম প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীর অভিভাবক জুবায়ের আহমেদ এবং শেখ সা'দ বিন জাহান।
জানতে চাইলে আল-ফারুক ক্যাডেট মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'আমরা এ দাবি নিয়ে প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবো। এ ধরনের ছুটির প্রয়োজন নেই। যেখানে মাদরাসায় ভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীই নেই, সেখানে ছুটি দিয়ে কী হবে? এটা শরিয়তবিরোধী বলে মনে করি আমরা।'
Comments