থাইরয়েড ক্যানসারের লক্ষণ বুঝবেন যেভাবে

থাইরয়েড হলো গলার একটি ছোট গ্রন্থি, যা শরীরের বিপাক, ওজন, হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে অনেক সময় থাইরয়েডের বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়, যার মধ্যে সবচেয়ে জটিল থাইরয়েড ক্যানসান। থাইরয়েড ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত কোনও লক্ষণ দেখায় না, তাই অনেক সময় রোগ ধরা পড়ে দেরিতে। কিন্তু কিছু সূক্ষ্ম উপসর্গ থাকতে পারে যা নজর দিলে রোগ প্রাথমিক অবস্থাতেই শনাক্ত করা সম্ভব। মায়ো ক্লিনিকের এক প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা এ বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।
থাইরয়েড ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণসমূহ
> ঘাড়ে হালকা চাকা বা গাঁট দেখা যাওয়া
> জামার কলার টাইট লাগার অনুভূতি
> গলার স্বরে কর্কশতা বা ভিন্নতা
> গিলতে সমস্যা
> ঘাড়ের লিম্ফ নোড ফোলা
> গলা ও ঘাড়ে হালকা ব্যথা
এই লক্ষণগুলোর যেকোনো প্রকাশ ঘটলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিলে সাফল্যের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
থাইরয়েড ক্যানসারের ধরন
প্যাপিলারি থাইরয়েড ক্যানসার: সবচেয়ে সাধারণ, ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং চিকিৎসায় ভালো সাড়া দেয়।
ফলিকুলার থাইরয়েড ক্যানসার: তুলনামূলক কম সাধারণ; হাড় ও ফুসফুসে ছড়াতে পারে।
হারথল সেল থাইরয়েড ক্যানসার: আগ্রাসী ধরনের, অন্যান্য অঙ্গেও ছড়াতে পারে।
এনাপ্লাস্টিক থাইরয়েড ক্যানসার: সবচেয়ে বিপজ্জনক ও দ্রুত ছড়ানো ক্যানসার।
মেডুলারি থাইরয়েড ক্যানসার: জেনেটিক কারণে হতে পারে; ক্যালসিটোনিন হরমোন উৎপাদন কেন্দ্র থেকে শুরু হয়।
অন্যান্য বিরল ধরনের ক্যানসার: যেমন থাইরয়েড লিম্ফোমা ও সারকোমা।
ঝুঁকির কারণ
> অতীতের মাথা বা ঘাড়ে রেডিয়েশন থেরাপি
> পারিবারিক ইতিহাস বা জেনেটিক মিউটেশন
> নির্দিষ্ট জেনেটিক সিনড্রোম
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সব ক্ষেত্রে ঝুঁকি স্পষ্ট নয়। তবে যাদের বংশগতভাবে মেডুলারি থাইরয়েড ক্যানসারের সম্ভাবনা বেশি, তাদের ক্ষেত্রে প্রোফাইল্যাকটিক থাইরয়েডেকটমি অর্থাৎ প্রতিরোধমূলক অস্ত্রোপচার বিবেচনা করা যেতে পারে। এর আগে অবশ্য একজন জেনেটিক কাউন্সেলরের পরামর্শ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
থাইরয়েড ক্যানসার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। তাই ঘাড়ে ছোট ফোলা, স্বরে পরিবর্তন বা গিলতে সমস্যা দেখলেই উপেক্ষা না করে ডাক্তার দেখানো জরুরি। সময়মতো শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
Comments