কেলেঙ্কারির কারণে বন্ধ হচ্ছে ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় অবশেষে বাঁচতে পারল না দেশের ৯টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে না পারা, ঋণের পাহাড়সম খেলাপি আর মূলধনের ঘাটতিতে ভেঙে পড়া এসব প্রতিষ্ঠানকে 'অপরিচালনযোগ্য' ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে অবসায়নে গেলেও ক্ষুদ্র আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেবে সরকার। কর্মচারীরাও চাকরিবিধি অনুযায়ী সুবিধা পাবেন।
বন্ধ হতে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো - পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, আভিভা ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কম্পানি, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স কম্পানি এবং প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধে সরকারকে খরচ করতে হবে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের বেশির ভাগই খেলাপি। এফএএস ফাইন্যান্সের ৯৯.৯৩ শতাংশ, ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৯৮ শতাংশ,বিআইএফসির ৯৭.৩০ শতাংশ এবং ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ৯৬ শতাংশ ঋণ খেলাপি।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং একাই খেলাপি ঋণ জমিয়েছে তিন হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা। পিপলস লিজিংয়ের খেলাপি ঋণের হার ৯৫ শতাংশ এবং লোকসান চার হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। আভিভা ফাইন্যান্সের খেলাপি ৮৩ শতাংশ,লোকসান তিন হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৭৫ শতাংশ ঋণ খেলাপি,লোকসান ৯৪১ কোটি টাকা। জিএসপি ফাইন্যান্সের খেলাপি ৫৯ শতাংশ,লোকসান ৩৩৯ কোটি টাকা। প্রাইম ফাইন্যান্সের ৭৮ শতাংশ ঋণ খেলাপি,লোকসান ৩৫১ কোটি টাকা।
বর্তমানে দেশে মোট ৩৫টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ২০টিকে সমস্যাগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ২০ প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণ ২৫ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা,যার মধ্যে খেলাপি ২১ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা।
Comments