রাতের খাবারের পর হাঁটার যেসব উপকারিতা

হাঁটা কেবল তখনই কঠিন যতক্ষণ না এটি অভ্যাসে পরিণত হয়। মানুষ নিজের জীবনযাপনে হাঁটার অভ্যাস যোগ করে বিভিন্ন উপায়ে। তার মধ্যে একটি হলো রাতের খাবারের পরে হাঁটা। এই সহজ অভ্যাস বছরের পর বছর ধরে ধীরে ধীরে শরীরকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারে, রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে, ঘুমের মান উন্নত করতে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে।
১. হজম ভালো করে
খাবারের পরে হাঁটা রক্তের প্রবাহ এবং পাচনতন্ত্রে খাবারের চলাচলকে উদ্দীপিত করে হজমকে উৎসাহিত করে। হাঁটা একটি কম প্রভাবশালী কার্ডিও ব্যায়াম যা বেশিরভাগ হজমজনিত রোগ, যেমন বুকজ্বালা, আইবিএস, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেট ফাঁপা প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে খাবারের পরপরই হাঁটা পেট খালি করার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এর অর্থ হলো, খাবার পেট থেকে দ্রুত অন্ত্রে চলে যায়, যা হজমকে সহজ করে তোলে।
২. ক্যালোরি পোড়ায়
খাবারের পরে হাঁটা ধীরে ধীরে বর্ধিত বিপাকের মাধ্যমে ক্যালোরি পোড়ায়। সামান্য হাঁটাও হৃদস্পন্দনকে একটু দ্রুত করবে এবং শরীরকে আরও শক্তি পোড়াতে উৎসাহিত করবে। এক দিনের মধ্যে এই ক্ষুদ্র ক্যালোরি পোড়া ওজন কমাতে বা ওজন বজায় রাখার জন্য জমা হয়। এটি কঠোর ব্যায়াম ছাড়াই সক্রিয় থাকার একটি কম প্রভাবশালী, কিন্তু খুব কার্যকর উপায়।
৩. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
খাওয়ার পর হাঁটার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণিত সুবিধার মধ্যে একটি হলো, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খাবারের পরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং তারপরে ব্যায়াম পেশীকে আরও কার্যকরভাবে রক্ত থেকে গ্লুকোজ বের করে দিতে সাহায্য করে। এটি রক্তে শর্করার স্পাইক কমায় এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে। খাবারের পরে ১০-১৫ মিনিট হাঁটার ফলে সারাদিন গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ উন্নত হতে পারে।
৪. শরীরের চারপাশে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে
হাঁটা রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, টিস্যু এবং অঙ্গগুলোতে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। খাবারের পরে উন্নত রক্ত সঞ্চালন খাদ্য হজমকে সহজতর করে এবং পুষ্টির শোষণকে উন্নত করে। রক্ত সঞ্চালন পায়ে রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে। দীর্ঘমেয়াদে উন্নত রক্ত সঞ্চালন হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখে, রক্তচাপ কমায় এবং সামগ্রিক শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করে। হাঁটা আপনার রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থাকে সুস্থ এবং কর্মক্ষম অবস্থায় রাখার একটি সহজ পদ্ধতি।
৫. মেজাজ উন্নত করে
রাতের খাবারের পরে হাঁটা মেজাজের ওপর শক্তিশালী প্রভাব ফেলে বলে জানা যায়, যা এন্ডোরফিন, সেরোটোনিন এবং অন্যান্য 'ফিল গুড' মস্তিষ্কের রাসায়নিক নিঃসরণকে উৎসাহিত করে। এটি মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং এমনকী হালকা বিষণ্ণতা থেকেও নিরাময় করতে পারে।
৬. ঘুমের মান উন্নত করে
রাতের খাবারের পরে রাতের হাঁটা শরীরকে শান্ত করে ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। হাঁটা হলো একটি সহজ ব্যায়াম যা কর্টিসল-উদ্দীপক স্ট্রেস হরমোনকে দমন করে এবং মেলাটোনিন এবং নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে, যা উভয়ই ভালো মানের ঘুম তৈরি করে।
Comments