আবারও স্কটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে এমএসপি নির্বাচিত হলেন ফয়সাল চৌধুরী

আসন্ন স্কটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে স্কটিশ লেবার পার্টির, এডিনবরার নর্দান আসনে লেবার প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয় বারের মত এমএসপি নির্বাচিত হলেন বাংলাদেশী বংশদ্ভুত ফয়সাল চৌধুরী। এর আগে তিনি স্কটিশ পার্লামেন্টের কালচারাল ছায়ামন্ত্রী হিসেবে সততা, নিষ্ঠা ও সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরার দীর্ঘ দিনের সমতা আন্দোলনকারী ও বর্তমান এমএসপি ফয়সাল চৌধুরী নবগঠিত এডিনবরার নর্দান আসনের জন্য আসন্ন স্কটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনী মনোনয়ন পেয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, প্রতিটি সম্প্রদায়, প্রতিটি রাস্তা এবং প্রতিটি বাসিন্দার জন্য জোরালো কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করবেন।
এডিনবরায় ৩৫ বছর ধরে বসবাসরত ফয়সাল চৌধুরী ড্রামন্ড হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন এবং কৈশোর বয়সেই তিনি কমিউনিটি উন্নয়নের জন্য কার্যক্রম শুরু করেন।
২০২১ সালে প্রথম বারের মতো স্কটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি সমাজের বৈষম্য দূরীকরণ, জনসেবার সুরক্ষা এবং অবহেলিত জনগোষ্ঠীর ন্যায্য দাবিগুলো জোরালোভাবে তুলে ধরার জন্য পরিচিতি লাভ করেন। তার কাজের পরিধি জুড়ে রয়েছে আবাসন,স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও কমিউনিটি নিরাপত্তা।

প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে তিনি বলেন, 'এডিনবরার নর্দান আমার বাড়ি। আমি জানি আমাদের এলাকার শক্তি কোথায়, মানুষ কী ধরনের বাস্তব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তাও জানি। আবাসন সংকট থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সেবায় আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং আমাদের কমিউনিটির উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবো'।
তিনি লেবার পার্টির সদস্য, CWU, ASLEF, কো-অপারেটিভ পার্টি এবং অন্যান্য সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আরও বলেন, 'আমি নিরলসভাবে কাজ করব, এডিনবরার নর্দান আসনে লেবারের বিজয় নিশ্চিত করতে এবং গণ মানুষের জন্য জোরালো কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করতে'।
সীমানা পরিবর্তনের পর প্রথমবারের মতো এডিনবরার নর্দান আসনে ভোট হবে। ফয়সাল চৌধুরীর মতে, এটি বাসিন্দা ও এমএসপির মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক গড়ে তোলার নতুন সুযোগ তৈরি হবে যা সেতুবন্ধন হিসেবে আগামিতে কাজের ক্ষেত্র আরোও প্রসারিত হবে।
তিনি বলেন, এডিনবরার নর্দান একটি প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যময় এলাকা। এখানে ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায় আমাদের শহরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কিন্তু জীবনযাত্রার ব্যয় সংকট, জনসেবার ওপর চাপ এবং ক্রমবর্ধমান বৈষম্য অনেককে পিছিয়ে দিচ্ছে। আমি আবাসনে বিনিয়োগ, ন্যায্য মজুরি এবং স্থানীয় ব্যবসার উন্নয়নের জন্য লড়বো'।
ফয়সাল চৌধুরী তার প্রচারণাকে 'সহজপ্রাপ্যতা ও কর্মমুখিতা'র ওপর ভিত্তি করে আশা ব্যক্ত করেন।
ইতিহাসের অংশ হিসেবে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন ফয়সাল চৌধুরী। ২০২১ সালে প্রথম বারের মত নির্বাচিত হয়ে ফয়সাল চৌধুরী ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যিনি স্কটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হন। সমস্ত যুক্তরাজ্যে তিনি একমাত্র পুরুষ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সংসদ সদস্য। বর্তমানে তিনি চারজন বিশিষ্ট নারী ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এমপি রুশনারা আলী, আফসানা বেগম, রূপা হক ও টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কমিউনিটির কণ্ঠস্বর তুলে ধরছেন।
তার সততা, নিষ্ঠা, অধ্যবসায় ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিনে দিনে তাকে যুক্তরাজ্যে ন্যয়ভিত্তিক ও সমতার বিভাজন দূরীকরণ এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে অগ্রসর করার লক্ষে গণমানুষের কণ্ঠ হিসেবে সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাজ্যে জুড়ে এটি নিংসন্দেহে গর্বের ও আনন্দের।
Comments