ওবামাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বলে অভিযুক্ত করলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে 'রাষ্ট্রদ্রোহের' অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি, ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় 'রাশিয়াগেট' ও 'ভোট জালিয়াতি' নিয়ে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন ওবামা এবং তার প্রশাসনের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, সম্প্রতি ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (ডিএনআই) হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী তুলসী গ্যাবার্ডের একটি প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট যে, ওবামা প্রশাসনের লোকজন ইচ্ছাকৃতভাবে ভুয়া গোয়েন্দা তথ্য তৈরি করেছিলেন।
ট্রাম্পের ভাষায়, 'এটি ছিল রাষ্ট্রদ্রোহ। বারাক হোসেন ওবামা ছিলেন এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা। হিলারি ক্লিনটন, স্লিপি জো বাইডেন, জেমস কোমি, জেমস ক্ল্যাপার—সবাই এই চক্রান্তে যুক্ত ছিলেন।'
তিনি আরও বলেন, 'তারা একটি নির্বাচন হ্যাক করতে চেয়েছিল, এবং ধরা পড়ে যায়। এরপর ২০২০ সালের নির্বাচন তারা সত্যিই হ্যাক করেছিল। আমি জানতাম, আমি সেই নির্বাচনে অনেক ভোটে জিতেছিলাম। তাই আমি আবারও লড়াই করলাম এবং বিশাল ব্যবধানে জয়ী হলাম।'
ট্রাম্প তুলসী গ্যাবার্ডের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বলেন, এতে শতাধিক ডিক্লাসিফায়েড (গোপনীয়তা মুক্ত) নথি রয়েছে, যেগুলো প্রমাণ করে যে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে রাশিয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল।
এদিকে এসব অভিযোগ 'একেবারেই ভিত্তিহীন' বলে দাবি করেছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামার দপ্তর। ট্রাম্পের বক্তব্যের পরপরই ওবামার অফিস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, 'গ্যাবার্ডের তথাকথিত প্রতিবেদনটি ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত প্রচলিত বিশ্লেষণকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কোনো নতুন প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'প্রেসিডেন্টের অফিসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই সাধারণত আমরা এমন ভিত্তিহীন দাবি উপেক্ষা করি। কিন্তু এই অভিযোগগুলো এতটাই হাস্যকর ও বিভ্রান্তিকর যে, জবাব দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এগুলো মনোযোগ ঘোরানোর এক দুর্বল ও উদ্ভট চেষ্টা।'
উল্লেখ্য, 'রাশিয়াগেট' বিতর্কে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তারা রাশিয়ার সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করে ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছে। এই অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন তদন্ত চলেছে, যার নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক এফবিআই প্রধান রবার্ট মুলার।
তবে ট্রাম্প বরাবরই এসব তদন্তকে 'উদ্দেশ্যমূলক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র' বলে অভিহিত করে আসছেন।
Comments