বিদেশে থেকেও গোপনে তৎপরতা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল

জামালপুরের মেলান্দহের চরবাণিপাকুরিয়ার ইউনিয়নের ভোট ছিনতাইকারী খ্যাত আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল চৌধুরীর বিদেশে থেকেও গোপনে তৎপরতা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সোহেল চৌধুরী জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী এর ভাগ্নে।৷ ফারুক আহমেদ চৌধুরীর ভাগ্নে হওয়ায় নিজ এলাকায় গড়ে তুলেন ত্রাসের রাজত্ব। প্রভাব খাটিয়ে চরবাণিপাকুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদও বাগিয়ে নেন।
দেশে থাকা কালীন সময়ে তার অত্যাচারে নিজ দলের লোকজনও অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। এতটাই প্রভাব বিস্তার করেছিলেন যে, নিজ দলীয় নেতারা অতিষ্ঠ হয়ে তাকে মামলা-মোকদ্দমায় ফাঁসিয়ে দেয় এবং মেরে ফেলার চেষ্টা করেন উপায় না পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাধ্যমে দেশ ছাড়তে বাধ্য হোন তিনি।
সোহেল চৌধুরী ঠিকাদারি কাজের সাথেও নিজেকে যুক্ত করেছিলেন। তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর নাম ভাঙ্গিয়ে ঠিকাদারী কাজ বাগিয়ে নেন। পছন্দমতো কাজ না পেলে দলীয় ঠিকারদের সাথেও তার দ্বন্দ চরমে পৌঁছে যায়। নামমাত্র ঠিকাদারী কাজ করেও দু হাত ভরে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন। সেই সাথে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে গড়ে তুলেন চাঁদাবাজি সিন্ডিকেট। সেই সিন্ডিকেটের প্রধান হয়েও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন এই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা।
আওয়ামী লীগের প্রতিটি নির্বাচনে সোহেল চৌধুরী ছিলেন সামনের কাতারে। তিনি স্থানীয়ভাবে ভোট ছিনতাইকারী নেতা নামেও বেশ পরিচিত। ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনের স্থানীয় জনপ্রিয় নেতা গোলাম হাফিজ নাহিনের এজেন্টদের মারধোর করে ভোট বাক্স ছিনতাই করেন। পরবর্তীতে দেশ ছাড়ার পর তাকে প্রধান আসামী করে জামালপুর জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীরা।
এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে গড়ে তুলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। এই বাহিনীর প্রধান হিসেবে কাজ করেন তিনি। ভূমিদস্যু থেকে শুরু করে সকল অপকর্মেই নিজেকে রেখেছিলেন সামনের কাতারে। যার ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খোলার সাহস পর্যন্ত পায় নি।
পরবর্তীতে প্রাণ বাঁচাতে বিদেশে চলে গেলেও তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। যার শাস্তি হলে তাকে বছরের পর বছর থাকতে হবে জেলে। তবুও থেমে নেই তার অপতৎপরতা।
৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন ভাবে নিষিদ্ধ সংগঠন স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। দেশের বাইরে থেকে বিভিন্নভাবে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। " মুজিব বাহিনী" নামের একটি সংগঠনের সাথেও তার রয়েছে সখ্যতা। নিয়মিত টেলিগ্রামে মিটিং করে দেন নানা দিক নির্দেশনা। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে বেকায়দা ফেলতে নানামূখী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলেন, গত ১৭ বছর চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসী সোহেল চৌধুরীর অত্যাচারে এলাকায় থাকতে পারিনি। সে এতটাই খারাপ লোক ছিলো যে, নিজ দলের লোকজন তার নামে মামলা করেছে। তাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছেন। এই আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল চৌধুরী আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।মেলান্দহ উপজেলায় তার নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা যে কোন সময় ঘটাতে পারে নৈরাজ্য।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোহেল চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িতো। আমি যা করেছি তা আমাদের দলের নেতাদের নির্দেশেই করেছি। আজীবন আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করবো। দলকে সুসংগঠিত করতে আমি সবকিছু করতে রাজী আছি। আমি জানি দেশে গেলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। তাই দল ক্ষমতায় আসলেই দেশে ফিরবো।
Comments