শেরপুরে অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই, ক্ষতি ৩ কোটি টাকা

শেরপুরের শ্রীবরদীতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনটি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ৩০ জুন সোমবার ভোরে উপজেলার ঝগড়ারচর দক্ষিণ বাজারে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আনুমানিক তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও দুইটি দোকানে সামান্য ক্ষতি হয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা হলো- মেসার্স মুরাদ স্টোরের মালিক মো. মুরাদুজ্জামান, মেসার্স অনু এন্টারপ্রাইজের মালিক শ্রী চৈতন্য মোদক ও শিহাব স্টোরের মালিক মনিরুজ্জামান।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভোরে বাজারের লোকজন আগুন লাগার ঘটনা টের পায়। সেই সময় সবাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলো। আগুনের তীব্রতা এতই বেশি ছিলো যার জন্য কোন মালামাল বের করা যায়নি। এদিকে শ্রীবরদী উপজেলা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়ার পরেও দেরিতে পৌঁছার অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। বিকল্প হিসেবে ব্যবসায়ীরা পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলার ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারাও অংশগ্রহণ করে। এতে দোকান ও গোডাউনে থাকা চাল, ডাল, ভূষি, খাদ্য পণ্য, কসমেটিক, তেল সহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে যায়।
স্থানীয় আব্দুল জলিল বলেন, শ্রীবরদী থেকে ঝগড়ারচরে সম্পুর্ণ রাস্তাই পাকা। এছাড়া রাস্তাও অনেক প্রসস্থ। গাড়ি দ্রুত গতিতে চলতেও কোন সমস্যা নাই। তবে পৌঁছতে কেন এত দেরী হলো তা আমরা বুঝতে পারলাম না। আরো দ্রুত ফায়ার সার্ভিস আসলে এত ক্ষয়ক্ষতি হতোনা।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বিল্লাল মিয়া জানান, ভোরবেলায় ঘুমে থাকা অবস্থায় বাজারের লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের দোকানে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে দ্রুত দোকানে এসে দেখি দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় আমরা কোন মালামাল বের করতে পারি নাই। পরে আমরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা অনেক পরে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষনে আমাদের সমস্ত মালামাল ও দোকানঘর সম্পূর্ণ আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। সবকিছু হারিয়ে আমরা পথে বসে গেলাম।
ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী মেসার্স মুরাদ স্টোরের মালিক মো. মুরাদুজ্জামান বলেন, আমার একটি মুদি দোকান ও দুইটি গোডাউনের সমস্ত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি নি:স্ব হয়ে গেলাম।

মেসার্স অনু এন্টারপ্রাইজের স্বতাধিকার শ্রী চৈতন্য মোদক বলেন, ভোরে খবর পাই দোকানে আগুন লেগেছে। অগ্নিকান্ডে আমার একমাত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সকল মালামাল পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ৮০-৯০ লক্ষ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসা ছাড়া আমার জীবনযাপনের আর কিছু যাই। আমি পথে বসে গেলাম।
মেসার্স শিহাব স্টোরের মালিক মনিরুজ্জামান বলেন, অগ্নিকান্ডে আমার দোকানের সকল মালামাল পুড়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ৪০-৫০ লক্ষ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। এসময় ব্যবসায়ীরা সরকারের সহযোগিতা কমনা করেন।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী ফায়ার সার্ভিসের সাব স্টেশন অফিসার আশরাফ হোসেন জানান, আমরা খবর পাবার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পৌঁছি। এছাড়াও বকশীগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসে ইউনিট যৌথভাবে আমাদের সাথে আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেয়। আগুন দ্রুত সময়ের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে সম্পূর্ণ আগুন নেভাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। আমরা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুনের সুত্রপাত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।
Comments