ইসরায়েলের সঙ্গে এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়নি: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইসরায়েলের সঙ্গে এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বা সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোরে এ কথা জানান তিনি।
তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'ইসরায়েল যদি তেহরানের স্থানীয় সময় অনুযায়ী ভোর ৪টার মধ্যে ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে তাদের অবৈধ আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে আমরা আর পাল্টা হামলা চালিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা রাখি না।'
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক অভিযান বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আরাগচি আরও জানান, ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাবে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত, অর্থাৎ রাত ৪টা পর্যন্ত, তাদের সামরিক অভিযান চালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, 'আমাদের শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়ার জন্য সামরিক অভিযান চালিয়েছে। আমি ইরানের সব জনগণের সঙ্গে আমাদের সাহসী সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, যারা তাদের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত দেশকে রক্ষা করতে প্রস্তুত এবং শত্রুর প্রতিটি হামলার জবাব দিয়েছেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।'
এর আগে, সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান ও ইসরায়েল সম্পূর্ণ ও পুরোপুরি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং সাবেক পেন্টাগন কর্মকর্তা ডেভিড ডেস রোচেস আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য সত্ত্বেও দুই দেশ যুদ্ধবিরতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।'
ইরানের আপাত আপত্তি প্রকৃতপক্ষে কোনো মৌলিক বিরোধ নয় বরং শর্ত আরোপ বলে মনে করেন তিনি।
ডেভিড ডেস বলেন, 'এটা মূলত তাদের নিজেদের শ্রোতাদের উদ্দেশে বলা, যেন তারা দেখাতে পারে যে—এই প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব আমাদের হাতে। আমাদের ওপর কেউ যুদ্ধবিরতি চাপিয়ে দিচ্ছে না, আমরা নিজেরাই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।'
তবে বাস্তবতা ভিন্ন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সাবেক এই পেন্টাগন কর্মকর্তা বলেন, 'যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতা ঠিক কখন থেকে শুরু হবে, এই সূক্ষ্ম বিষয়গুলো নিয়ে আপত্তি জানিয়ে তারা এমন বক্তব্য দিতে পারছে। আমি মনে করি, ইরানের পক্ষে এই মাত্রায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।'
তার ভাষ্যে, কাতারে অবস্থিত আল-উদেইদ ঘাঁটিতে ইরানের হামলা ছিল সুপরিকল্পিত।
তিনি বলেন, 'আমরা এখনই হয়তো নিশ্চিতভাবে জানতে পারবো না, তবে কয়েক মাস পর হয়তো বুঝতে পারব—তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন এক ধরনের অকার্যকর আঘাত হেনেছে, নাকি তাদের অস্ত্রাগারের সীমাবদ্ধতার কারণে এটাই তাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য ছিল।'
ডেভিড ডেস আরও বলেন, 'তবে এটা স্পষ্ট যে, অভ্যন্তরীণ বৈধতা রক্ষার জন্য; সেটি নিজেদের মধ্যেই হোক বা শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে, তাদের কিছু না কিছু প্রতিক্রিয়া দেখাতেই হতো।'
Comments