আজ বিশ্ব বাবা দিবস

আজ ১৫ জুন, বিশ্ব বাবা দিবস। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বব্যাপী বাবা দিবস পালন করা হয়। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও যে তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল, এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটি পালন করা হয়।
সকল সন্তানদের কাছে নির্ভরতার অন্যতম প্রতীক হচ্ছেন বাবা।সন্তানের কাছে শ্রদ্ধেয় এক গভীর অনুভূতির শব্দ এটি। নিখাদ ভালোবাসার সঙ্গে উচ্চারিত হয় 'বাবা' শব্দটি। বাবা শব্দের মাঝে জড়িয়ে আছে ভালোবাসা, মায়া, নির্ভরতা।
বাবা দিবসের ধারণাটি পশ্চিমা বিশ্বের হলেও দিবসটি এখন বাংলাদেশসহ প্রায় সব দেশেই উদ্যাপন করা হয়। বাংলাদেশেও বাবাদের সম্মান জানাতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজন করে বিশেষ অনুষ্ঠান, আলোচনাসভা এবং নানা আয়োজন।
জানা যায়, বাবা দিবসকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে সনোরা স্মার্ট ডড নামে এক নারীর। ১৯০৯ সালের আগে ওয়াশিংটনে বাবা দিবস বলে কোনও বিশেষ দিন ছিল না। সে সময় স্থানীয় গির্জায় ডড মা দিবস পালনের কথা শোনেন। মা দিবস পালনের রীতি রয়েছে কিন্তু বাবা দিবস পালনের রীতি নেই জেনে তিনি ভীষণ অবাক হন। তারপর তিনি বাবা দিবসের স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন।
ডড তার বাবাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন। মা ছিল না তার। মায়ের মৃত্যুর পর শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যে থেকেও তাদের সাত ভাইবোনকে বড় করে তুলেছিলেন তাদের সিঙ্গেল বাবা। বাবার এই ত্যাগ দেখে ডডের মনে হলো, মা দিবসের এত আয়োজন হলে বাবা দিবস কেন বাদ থাকবে। বাবাকে সম্মান জানানোর জন্যও একটা দিন থাকা দরকার।
তারপর অনেক চেষ্টা করে দীর্ঘ এক বছরের সাধনায় স্থানীয় কমিউনিটিগুলোতে বাবা দিবস পালন শুরু করেন ডড। ১৯১০ সালের ১৯ জুন বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত হয় বাবা দিবস।
বাবা দিবসের গুরুত্ব:
বাবা—জীবনের প্রথম নায়ক, প্রথম শিক্ষক, প্রথম আশ্রয়। যে কাঁধে আমরা শান্তির ছায়া পাই, যে হাত ধরে আমরা জীবনের পথে এগিয়ে যাই। বাবা দিবস সেই দিন, যখন আমরা তাঁদের এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের সম্মানে মাথা নুইয়ে ধন্যবাদ জানাই।
১৯৭২ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন সরকারিভাবে জুনের তৃতীয় রবিবারকে বাবা দিবস হিসেবে ঘোষণা করলেন। সেই থেকে প্রতি বছর এই দিনে হাজারো সন্তান তাদের বাবাদের কৃতজ্ঞতা জানায়, তাঁদের অবিচল ভালোবাসা ও ত্যাগের স্বীকৃতি দেয়।
বাবার ভালোবাসা এক নীরব বৃষ্টির মত, শুধু জীবন ভরিয়ে দেয়। বাবার হাত ধরেই আমরা শিখি জীবনযুদ্ধ, ধৈর্য আর সাহস। বাবা দিবস আমাদের সেই অমলিন বন্ধনকে স্মরণ করিয়ে দেয়, যেখানে ভালোবাসার স্রোত কখনো থামে না। সুতরাং, বাবা দিবস শুধু একটি দিন নয়, এটি এক শ্রদ্ধা, এক কাব্য, এক ভালোবাসার স্মৃতি, যা আমাদের হৃদয়ে চিরকাল জ্বলজ্বল করে থাকবে।
বাবা বট বৃক্ষের ন্যায় সবসময় মাথার উপর ছায়া দেন। যার বাবা নেই সে জানে বাবার গুরুত্ব। তাই আমাদের প্রত্যেকের যাদের বাবা আছে তাদের প্রতি যত্নবান হতে হবে।
Comments