রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জার্মানির চ্যান্সেলরের

জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর থর্স্টেন ফ্রেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইউরোপকে রাশিয়ার বিষয়ে এখন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাশিয়া থেকে গ্যাস ও ইউরেনিয়াম আমদানি নিষিদ্ধ করা, কিংবা হিমায়িত রুশ রাষ্ট্রীয় সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তা ব্যবহার করার মতো অবরোধ আরোপ করা যেতে পারে বলে জানান তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে ফ্রেই বলেন, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে দুর্বল করবে এবং পশ্চিমাদের লক্ষ্য পূরণে সাহায্যে করবে। তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপের নিষেধাজ্ঞাগুলো এতদিন রাশিয়ার ওপর কাঙ্ক্ষিত চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি, কারণ কিছু সিদ্ধান্ত নিতে ইউরোপের সদস্য দেশগুলো আগ্রহী ছিল না।
ফ্রেইর এই মন্তব্য আসে এমন এক সময়, যখন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা আরও বেড়েছে। ইউক্রেনের খারকিভসহ পূর্বাঞ্চলে নতুন করে আক্রমণ জোরদার করেছে মস্কো। এর জবাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্রিটেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এবার মূলত লক্ষ্য রাখা হয়েছে রাশিয়ার তেল ট্যাংকার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর, যারা আগের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে মস্কোকে সহযোগিতা করছে।
ফ্রেই মনে করেন, আসন্ন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞাগুলো আরও শক্তিশালী হওয়া উচিত। তিনি বলেন, প্রয়োজনে এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে যা ইউরোপের নিজস্ব স্বার্থকেও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, তবুও তা গ্রহণযোগ্য হবে যদি তা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর হয়।
তিনি বলেন, 'আমরা অতীতে দেখেছি, রাশিয়া কেবল তখনই প্রতিক্রিয়া দেখায়, যখন তাকে কঠিন ভাষায় বার্তা দেওয়া হয়। তাই এবারও আমাদের স্পষ্ট ও কঠোর বার্তা দিতে হবে।'
নর্ড স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও তিনি সমর্থন জানিয়েছেন। এ পাইপলাইন বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে রাশিয়া থেকে সরাসরি জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করে। জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্জ ইতিমধ্যেই হিমায়িত রুশ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন, যদি তা আইনিভাবে সম্ভব হয়।
বার্লিনের রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান আরও কঠোর হচ্ছে, বিশেষ করে যখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউরোপের যুদ্ধবিরতির আহ্বান বারবার অস্বীকার করছেন। ফ্রেই বলেন, পুতিন শান্তি চান না, বরং সময় কিনে নিচ্ছেন যাতে যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের পক্ষে পরিস্থিতি তৈরি করা যায়।
তিনি বলেন, রাশিয়া যখন শান্তি আলোচনায় বসে, তখনও ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রাখে এবং কখনো কখনো তা আরও তীব্র করে। ফ্রেইর মতে, এটাই প্রমাণ করে যে রাশিয়া প্রকৃত অর্থে শান্তির পক্ষে নয়, বরং যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স
Comments