ভারতীয় বাহিনীর হাতে পুশ ইন হওয়া মুসলিমদের পরিবার কোথায়?

স্বপ্ন ছিল একটি সাধারণ, শান্তিপূর্ণ জীবন। কিন্তু ২৬ এপ্রিল রাতে, ভারতের গুজরাট রাজ্যে ৭৮ জন দিনমজুর—যাদের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশি এবং ৩ জন ভারতীয় মুসলিম—একদম অপ্রত্যাশিতভাবে ভারতীয় পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাড়ি ভেঙে ফেলানো হয়, পুরুষদের চোখ বেঁধে সামরিক বিমানে তুলে নেওয়া হয় এবং তাঁদের স্ত্রীরা ও সন্তানদের আলাদা করে নিয়ে যায় ভারতীয় বাহিনী।
মঙ্গলবার দুপুরে গার্ড পশ্চিম জোনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৯ মে ভোররাতে ভারতের বাহিনী এই ৭৮ জনকে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ফেলে রেখে যায়। এরপর তাঁরা হেঁটে ফরেস্ট অফিসে চলে আসেন এবং পরে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন তাঁদের উদ্ধার করে।
এদের মধ্যে কয়েকজন জানান, ভারতীয় বাহিনী ২৬ এপ্রিল রাতে তাঁদের বাড়িতে হানা দেয় এবং পুরুষদের সামরিক বিমানে তুলে নেয়। স্ত্রীরা ও সন্তানদের নিয়ে গিয়ে তাঁদের আলাদা করা হয়। পরবর্তীতে জলপথে বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানেই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
কোস্ট গার্ড জানায়, ১০ মে উদ্ধারকৃতদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাদ্য সরবরাহ করা হয় এবং ১১ মে তাঁরা সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় হস্তান্তরিত হন।

উদ্ধারকৃতরা অভিযোগ করেছেন, জাহাজে তাঁদের কোনো খাবার দেওয়া হয়নি এবং তাঁরা শারীরিক নিপীড়ন ও ধর্মীয় অবমাননার শিকার হয়েছেন। তবে, তাঁদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হচ্ছে—স্ত্রী ও সন্তানরা কোথায় এবং তারা নিরাপদে আছেন কিনা।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান জানিয়েছেন, "ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মাধ্যমে আইনগত ও কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় তোলা হয়েছে।"
এদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছেন, এই ধরনের পুশ ইন আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির পরিপন্থী এবং এটি একটি মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে, যা এখন আঞ্চলিক সমাধানের দাবি জানাচ্ছে।
Comments