কুয়েট ভিসির অপসারনের দাবিতে চলছে ২য় দিনের আমরন অনশন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অপসারনের দাবিতে শিক্ষাথীদের আমরন অনশন ২২ এপ্রিল আজ (মঙ্গলবার) ২য় দিনে অব্যাহত রয়েছে। অনশনরত শিক্ষাথীদের মধ্যে ইতোমধ্যে ৪ জন অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
পুর্বঘোষনা অনুযায়ি আন্দোলনরত শিক্ষাথীরা সোমবার বিকেল ৩টা থেকে কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের গ্রাউন্ড ফ্লোরে আমরন অনশনে বসেন। টানা একদিন এক রাত শিক্ষার্থীদের অনশন চলাকালে দফায় দফায় তাদের সাথে আলোচনা করতে আসেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ছাত্র বিষয়ক পরিচালকসহ শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন।
এ সময় তারা অনশন না করে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানান। শিক্ষাথীদের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এক দফা দাবিতে অনড় থাকেন তাঁরা। এদিকে দুপুরে কুয়েটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। কুয়েটের ছাত্র কল্যান পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, কুয়েট কর্তৃপক্ষ বার বার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করছে। অথচো তারা কোন কথাই শুনছেনা। আন্দোলনরতদের প্রায় সকল দাবীই বিশ্ববিদ্যালয় মেনে নিয়েছে। এর পরেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রেস ব্রিফিংএর মাধ্যমে শিক্ষাথীদের আলোচনায় বসার আহবানও জানান তিনি।
এদিকে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের পরিচালক, সহকারী পরিচালক, ডেপুটি পরিচালকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক অনশনরত শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় যান।
এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের আবারও অনুরোধ করেন অনশন থেকে সরে এসে আলোচনায় বসার জন্য। এছাড়া তারা এ সময় শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙ্গানোর চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষার্থীরা তাঁতে সাড়া দেয়নি।
এর আগে সোমবার (২১ এপ্রিল) পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৩২ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে অংশ নেয়। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ওই দিন বেলা দুইটার পর থেকে শিক্ষার্থীরা দুর্বার বাংলার পাদদেশের সামনের সড়কে জড়ো হতে থাকে। এরপর বেলা তিনটায় সেখানে জড়ো হওয়া দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সংঘবদ্ধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দার পূর্ব দিকে অবস্থান নেয়। এরপর সেখানে বিভিন্ন বিভাগের ৩২ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে আমরণ অনশন শুরু করে। বাকি শিক্ষার্থীরা অনশনরত শিক্ষার্থীদের চারদিকে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে অর্ধশতাধিক শিক্ষক গতকাল সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের আমরণ কর্মসূচি থেকে সরে এসে আলোচনায় বসার প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। সকালে তারা আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান। বেলা আড়াইটায় ছাত্র কল্যান পরিচালক, সহকারী পরিচালক, ডেপুটি পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত অনশনস্থল স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় অবস্থান নেন।
এরপর বেলা তিনটার পর অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন থেকে সরে এসে আলোচনা টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়ে একাধিক শিক্ষক বক্তৃতা করেন। এ সময় শিক্ষকরা তাদেরকে জুস পান করার অনুরোধ জানিয়ে অনশন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। এভাবে টানা আড়াই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়েও শিক্ষার্থীদের নমনীয় করতে না পেরে ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের পরিচালকসহ শিক্ষকরা সেখান থেকে চলে যান। এ সময় তারা বলেন আমরা আবারও তোমাদের কাছে আসবো আলোচনার সুযোগ সব সময় রয়েছে।
Comments