চবির ৫ শিক্ষার্থীসহ ‘অপহৃত’ ৬ জনের সন্ধান ২৪ ঘণ্টায়ও মেলেনি

খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীসহ ছয়জনকে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাঁদের সন্ধান মেলেনি।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলার পানছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের গিরিফুল এলাকা থেকে তাঁদের অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) প্রসীত খিসা সমর্থিত ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টকে (ইউপিডিএফ) দায়ী করছে।
অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের অলড্রিন ত্রিপুরা ও মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা ও লংঙি ম্রো। তাঁরা সবাই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপহৃতদের সঙ্গে থাকা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং নিখোঁজদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে। বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, বিজু উৎসব উপলক্ষে পাঁচ শিক্ষার্থী বন্ধুদের সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে যান। উৎসব শেষে গত মঙ্গলবার তাঁরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার উদ্দেশ্যে দীঘিনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে পৌঁছান। চট্টগ্রামগামী বাস না পাওয়ায় কুকিছড়া এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান তাঁরা। বুধবার সকালে অটোরিকশায় করে শহরে ফেরার পথে গিরিফুল এলাকায় পৌঁছালে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাঁদের অটোরিকশাসহ অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পিসিপি বলছে, এ ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। এর আগে ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট রাঙামাটি সদর এলাকা থেকে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে ইউপিডিএেফর সশস্ত্র সদস্যরা অপহরণ করে মারধর করে তিন দিন পর ছেড়ে দিয়েছিল।
তবে এবারের অপহরণে ইউপিডিএফ সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সংগঠনটির জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, 'এ ঘটনার সঙ্গে ইউপিডিএফের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি আমাদের বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হতে পারে।'
দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান বলেন, 'খাগড়াছড়িতে আমার মেয়ে দিব্যি চাকমা তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে বিজুতে গিয়ে ফেরার পথে গিরিফুল থেকে অপহৃত হয়। প্লিজ, কারও মায়ের বুক খালি কইরেন না। দোষ থাকলে শাস্তি দিন, কিন্তু সন্তান হারানোর বেদনা যেন আর কোনো মায়ের কপালে না জোটে। আমি হাতজোড়ে অনুরোধ করছি, ফিরিয়ে দিন আমাদের সন্তানদের।'
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা বলেন, 'এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। তবে আমরা খোঁজ নিচ্ছি এবং অপহৃতদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।'
Comments