‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় নারীসহ দুজনকে মারধর
'জয় বাংলা' স্লোগান দেওয়ায় রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে নারীসহ দুজনকে মারধর করা হয়েছে।
প্রথমে এক ব্যক্তি সেখানে জয় বাংলা স্লোগান দিলে উপস্থিত বেশ কয়েকজন তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে সেখানকারই কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রিকশায় তুলে নিয়ে যান।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরে এক নারীকেও একই কারণে মারধর করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মারধরের শিকার ওই ব্যক্তিকে প্রথমে কলাবাগানের দিকে যেতে চেষ্টা করে উদ্ধারকারী কয়েকজন। এ সময় মারধর করা ব্যক্তিরা আবার তাদের পেছনে দৌড়াতে থাকেন। পরে রিকশা ঘুরিয়ে ধানমন্ডি ২৭ এর দিকে রওনা হলে সেদিকেও কিছু মানুষকে রিকশার পেছনে দৌঁড়াতে দেখা যায়।
এর আগে সকালের দিকে আবারও শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙা হয়। সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের পরে আবারও এক্সকাভেটর চালু করা হয় ভবনটি ভাঙতে। পরে সাড়ে ১০টার দিকে এক্সকাভেটর দিয়ে ভাঙা বন্ধ হয় এবং সেটি নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এরপরও মানুষকে হাতুড়ি, শাবল দিয়ে ভাঙতে দেখা গেছে।
এই সময় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের আশপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যদের দেখা যায়নি।
সকাল ৯টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে সরেজমিনে দেখা গেছে, দলে দলে মানুষ গিয়ে সেখানে ভিড় করছেন। ওই সময় মানুষকে হাতুড়ি দিয়ে দেয়াল ভাঙার চেষ্টা করতে দেখা যায়। ভেতরে একটি ভবন থেকে মানুষকে বই নিয়ে যেতে দেখা যায়। কাউকে কাউকে কাটার দিয়ে রড, স্টিলের জিনিসপত্র কাটতে দেখা গেছে।
ভেতরের একটি ভবন থেকে মানুষকে বই নিয়ে যেতে দেখা যায়। বেশির ভাগ বই হলো বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষার অনুবাদ। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন বইও রয়েছে।
এ আগে বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বাংলাদেশকে 'ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি' মুক্ত করার ঘোষণা দেওয়ার পর বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গত রাত ১১টা ৬ মিনিটে বাড়িটি ভাঙা শুরু হয়।
এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, 'এই মাটিতে স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন থাকবে না। আগামী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এসেছি, আমরা এটি নিশ্চিত করতে চাই আওয়ামী লীগের জন্য কোনো কিবলা অবশিষ্ট রাখব না।'
দেওয়ালের ইট খুলে হাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন সৈয়দ রিফাত নামের এক ব্যক্তি। এ সময় তিনি বলেন, 'ফ্যাসিবাদের ধ্বংসস্তূপের প্রমাণ রেখে দেওয়ার জন্য এই ইট রাখলাম। এরপরও যদি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের কেউ ফিরে আসার কথা বলে, এই ইট তার কপালে যাবে।'
৩২ নম্বরের আশপাশের কয়েকটি বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। রাত ১১টায় ৩২ নম্বরের বাড়িটি ভাঙার জন্য বুলডোজারের জন্য বাড়িটির সামনে অপেক্ষা করছিলেন ছাত্র-জনতা। এ সময় ৩২ নম্বরের পাশের রাস্তা দিয়ে একটি ক্রেন যাচ্ছিল। বুলডোজার ভেবে আটকানো হয় ক্রেনটি। পরে সেই ক্রেন নিয়ে আসা হয় বাড়িটির সামনে। এ সময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তাঁরা। সেই ক্রেন দিয়েই বাড়িটি ভাঙার শুরু করা হয়।
Comments