১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচ জয়
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হার দিয়ে শুরু করা বাংলাদেশের সামনে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না। আন্টিগাতে প্রথম ম্যাচে না পারলেও জ্যামাইকায় কিংস্টন টেস্টে তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে ক্যারিবিয়ানদের ১০১ রানে হারিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রটাও তাতে বাংলাদেশ জয় দিয়েই শেষ করেছে। এই জয়ে ১-১ সমতায় সিরিজ শেষ করলো বাংলাদেশ।
কিংসটনে ১০১ রানের জয়ের মাধ্যমে ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে জয় পেলো টাইগাররা। সবশেষ ২০০৯ সালে ক্যারিবিয়ান দ্বীপ থেকে টেস্টে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই সিরিজ দিয়েই অধিনায়কত্বের শুরু করেছিলেন সাকিব আল হাসান। সেই সাকিব এখন ক্যারিয়ারের শেষ দেখছেন। এমন জয়ে তাই উচ্ছ্বসিত হওয়াটাই বেশ স্বাভাবিক।
কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এই মাঠে ২১২ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। এবার উইন্ডিজের লক্ষ্য ছিল ২৮৭ রানের। টপ-অর্ডারের শুরুটা নেহাত মন্দ ছিল না। তবে অভিজ্ঞ তাইজুলের ঘূর্ণি আরও একবার পথ দেখাল বাংলাদেশকে। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮৫ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।
জ্যামাইকায় কিংস্টন টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে নাহিদ রানার ৫ উইকেট শিকারে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দেশের বাইরে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই ছিল সর্বনিম্ন রানের স্কোর। ১৮ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা।
দলের হয়ে চতুর্থ দিনে অনেকটা একাই লড়াই করেছেন জাকের আলি। তবে ৯ রানের জন্য মিস করেছেন সেঞ্চুরি। ৫ ছক্কা ও ৮ চারে ৯১ রান করেন জাকের। তার ব্যাটে ভর করে ২৬৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ক্যারিবিয়ানদের টার্গেট দাঁড়ায় ২৮৭ রানের।
২৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫৭ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখান তাইজুল ও তাসকিন আহমেদ। মিকাইল লুইস ৬ ও কাসি কার্টি ১৪ রান করে আউট হন। তবে কেভাম হজ ও ক্রেইগ ব্রাফেটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই দুই ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তাইজুল। ব্রাফেট ৪৩ ও হজ ৫৫ রান করে আউট হন।
তাদের বিদায়ের পর আর কেউ থিতু হতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ১৮৫ রানে অলআউট হয় ক্যারিবিয়ানরা। তাইজুল নেন ৫টি উইকেট। এ ছাড়া তাসকিন ও হাসান মাহমুদ নেন ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশ: ১৬৪ ও ২৬৮ (জাকের ৯১, সাদমান ৪৬, মিরাজ ৪২, শাহাদাত ২৮; রোচ ৩/৩৬, আলজারি ৩/৭৭)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৪৬ ও ১৮৫ (হজ ৫৫, ব্রাফেট ৪৩; তাইজুল ৫/৫০, হাসান ২/২০, তাসকিন ২/৪৫)।
ফল: বাংলাদেশ ১০১ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তাইজুল ইসলাম।
সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজ ১-১ সমতা।
প্লেয়ার্স অব দ্য সিরিজ: তাসকিন আহমেদ ও জেডন সিলস।