বিকেলে ঘুমানোটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি খারাপ?
এমন অনেকেই আছেন যারা বিকেলে হলেই ঘুমান। এমনি দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমানো অনেকের প্রতিদিনের রুটিনের অন্যতম একটি অংশ। তবে অনেকেরই জানেন কি এই সময়টার ঘুমানো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিরকর। বিষয়টি নিয়ে একেক জন একেক কথা বলেছেন। কেউ বলেন এটা মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে আরেক দলের ভাষ্য এটা স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। চিকিৎসকরা বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে বিকেলে ঘুমের অভ্যাস প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। হেলথ শটের এক প্রতিবেদনে এই বিষয়ে উঠে এসেছে বিভিন্ন তথ্য।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ঘুমাতে হবে। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক নিজের দরকারি সব তথ্য ঠিকমতো গুছিয়ে নেয়। অপরদিকে সব অপ্রয়োজনীয় তথ্য সরিয়ে রাখে। শরীর এই সময় নিজেকে সারিয়ে তোলার কাজে ব্যস্ত থাকে। এমনকি এই সময়তেই দেহে বেশিরভাগ গঠনমূলক কাজ হয়। ঘুমের মাধ্যমেই কেটে যায় ক্লান্তি। পরবর্তী চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি হয় শরীর। তাই সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর বিকল্প নেই।
আমরা প্রকৃতিগত-ভাবে রাতে ঘুমাই এবং দিনে জেগে থাকি। এটাই আমাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। তবে অনেকেই বিকেলে ঘুমিয়ে নেন। কেউবা বলেন বিকালে ঘুমিয়ে নিলে তারা ভালো করে কাজ করতে পারে। আবার অনেকে বলেন এটা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। সত্যি হচ্ছে, ভোরে ঘুম থেকে জাগলে সারা দিন নানা কাজের ব্যস্ততায় একসময় ক্লান্তি ভর করে শরীরে। ক্লান্ত শরীরে ঠিকভাবে কাজ করা সম্ভব হয় না অনেক সময়।
মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়লে স্বাভাবিক মনঃসংযোগও ব্যাহত হয়। কাজের গতি কমে যায়। মনোযোগ এবং কাজের গতি আনতে বিকেলে ২০ থেকে ৩০ মিনিটের 'ন্যাপ' অর্থাৎ ছোট্ট ঘুম দেয়া যায়। দিনে ক্লান্ত হলে স্বল্পমেয়াদি হালকা ঘুম আমাদের জন্য উপকারী। সুযোগ থাকলে দুপুরে কিংবা বিকেলে ছোট্ট ঘুম দেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এই ঘুমটা হতে হবে রোজ একটি নির্দিষ্ট সময়ে, এলোমেলো রুটিনে নয়।
তবে অনেকে বিকেলে কয়েক ঘণ্টা ঘুমান যেটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। আমেরিকান একাডেমি অব নিউরোলজির মেডিক্যাল জার্নালের এক গবেষণা থেকে জানা যায় দিনে যারা বেশিসময় ঘুমান তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। যারা ৯০ মিনিটের বেশি সময় বিকেলে ঘুমিয়ে নেন স্ট্রোকের ঝুঁকি ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। সমীক্ষাটি থেকে আরও জানা যায়, দিবে বেশি ঘুমালে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় যেটা পরে বিভিন্ন রোগের কারণ। এমনকি এতে অনেককে অনিদ্রার রোগে ভুগতে হয়।