ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় হেরেছে বাংলাদেশ
পুরো ম্যাচেই একচ্ছত্র দাপট ছিল বাংলাদেশেরই। দারুণ সব সুযোগও তৈরি করল তারা। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় গোল মিলেনি। বারপোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। উল্টো ধারার বিপরীতে গোল হজম করে হেরে বসে দলটি। ফলে বাংলাদেশের মাঠে দারুণ জয় তুলে নিল মালদ্বীপই।
বুধবার কিংস অ্যারেনায় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ০-১ গোলের ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশের। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন আলী ফাসির।
এদিন বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো সিনিয়র দলে খেলতে নামেন আবাহনীর ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সৈয়দ শাহ কাজেম কিরমানির কুয়েতের বিপক্ষে আগে অভিষেক হলেও এদিন প্রথমবারের মতো প্রথম একাদশে সুযোগ পান। তাতে ভালো খেললেও জয় মিলেনি।
তবে ম্যাচের ১৩তম মিনিটে গোলরক্ষক মিতুল মার্মার ভুলে গোল হজম করতে পারতো বাংলাদেশ। গোলমুখে হাত ফসকে বল ছুটে গেলে পেয়েছিলেন মালদ্বীপের ইবাহিম হোসেন। তার ব্যাকহিল মিতুলের গায়ে লেগে আটকে গেলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
১৫তম গোল করার মতো সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েও বাইরে হেড নেন রাকিব হোসেন। তিন মিনিট পর আলী ফাসিরের গোলে এগিয়ে যায় সফরকারীরা। হামজা মোহামেদের নেওয়া ফ্রি কিক থেকে ফাঁকায় অরক্ষিত অবস্থায় পেয়ে যান ফাসির। তার হেড জাল খুঁজে নিলে পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিকরা।
১৯তম মিনিটে ইসা ফয়সালের পাস সোহেল রানার নেওয়া শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। নয় মিনিট পর ভালো সুযোগ ছিল মালদ্বীপের। তবে নাইজ হাসানের শট সাইড নেট কাঁপায়। ৩০তম মিনিটে প্রথমার্ধের সেরা সুযোগ নষ্ট করেন ফাহিম। ইসার ফয়সালের ক্রস থেকে নেওয়া ফাহিমের শট একেবারে বারপোস্টে ঘেঁষে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৩৪তম মিনিটে রাকিবের শট মালদ্বীপের মোহামেদ ইরুফান ব্লক না করলে সমতায় ফিরতে পারতো বাংলাদেশ। এরসঙ্গে দুর্ভাগ্যও যোগ হয় শেষদিকে। ৪৪তম মিনিটে সোহেল রানার বুলেট গতির শট বারপোস্টে লেগে ফিরে আসলে হতাশা বাড়ে বাংলাদেশের।
৫০তম মিনিটে বারপোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়ায় মালদ্বীপেরও। দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে জোরালো শট নিয়েছিলেন আহমেদ আইহাম। তবে বারপোস্টে লেগে ফিরে আসলে এই যাত্রা বেঁচে যায় স্বাগতিকরা।
এক মিনিট পর সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। ফাঁকায় বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন রাকিব। তার শট এক ডিফেন্ডার ব্লক করলে ফিরতি বল পেয়ে গিয়েছিলেন। তবে ফাঁকায় থাকায় সতীর্থদের পাস না দিয়ে নিজে শট নিয়ে নষ্ট করেন সেই সুযোগ।
পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে ভালো সুযোগ ছিল মালদ্বীপের। শেষ মুহূর্তে ডি-বক্সের বাইরে ফাউল করে সে আক্রমণ নস্যাৎ করে দেন ইসা। বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রিকিক পায় মালদ্বীপ। তবে ফাসিরের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৬১তম বাংলাদেশকে বড় বাঁচা বাঁচিয়ে দেন রাকিব। ডি-বক্সে একা ফাঁকায় ঢুকে যাওয়া হামজাকে দারুণ ট্যাকলে কর্নারের বিনিময়ে বাঁচিয়ে দেন তিনি। ৬৯তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় শাহারিয়ার ইমনের হেড লক্ষ্যে থাকলে সমতায় ফিরতে পারতো বাংলাদেশ।
৭৪তম মিনিটে বলদি খেলোয়াড় মজিবুর রহমান জনির দূরপাল্লার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক হোসেন শরিফ। চার মিনিট পর শেখ মোরসালিনের শট লুফে নেন এই গোলরক্ষক। ৮৬তম মিনিটে এই গোলরক্ষকের দুর্দান্ত আরও একটি সেভে গোলবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। রাকিবের পাস থেকে মোরসালিনের নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন শরিফ।
পরের মিনিটে ফাঁকায় থেকে ইব্রাহিমের লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে ব্যবধান বাড়ানো হয়নি মালদ্বীপের। ৯০তম মিনিটে রাকিবের আরও একটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন দেন গোলরক্ষক শরিফ। নির্ধারিত সময়ের শেষ সময়ে রাকিবের দারুণ ভলি গোললাইন থেকে বেরিয়ে গেলে হতাশা বাড়তেই থাকে বাংলাদেশের।