নড়বড়ে পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় দিন শেষ করল বাংলাদেশ
মাত্র দুইদিন খেলা হওয়ার পরেই ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কায় আছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তবে আশার কথা কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেটে ১০১ রান করেছে বাংলাদেশ। এখনও ১০১ রানে পিছিয়ে আছে দলটি। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩০৮ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
আগের দিন আলোকস্বল্পতায় ৬ ওভার কম খেলায় এদিন ১৫ মিনিট আগে শুরু হয় খেলা। তবে দিন শেষে আবারও আলোকস্বল্পতার কারণে বাকি থাকে ১৬.৫ ওভার। এ সময় অবিচ্ছিন্ন ৪২ রানের জুটি গড়ে উইকেটে ছিলেন জয় ও মুশফিক। জয় ৮০ বলে ৩৮ এবং মুশফিক ২৬ বলে ৩১ রানে ব্যাটিং করছেন।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই জোড়া ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই সাদমান ইসলামকে আউট করেন কাগিসো রাবাদা। তার লেন্থ বলে কিছুটা বাড়তি বাউন্স হয়েছিল। ডিফেন্স করতে গেলে ব্যাট-প্যাড হয়ে চলে যায় শর্ট লেগে দাঁড়ানো টনি ডি জর্জির হাতে। ৭ বলে ১ রান করেন সাদমান।
একই ওভারে মুমিনুল হককেও তুলে নেন রাবাদা। তার আরও একটি লেন্থ ডেলিভারি জায়গায় দাঁড়িয়ে ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন এই ব্যাটার। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় তৃতীয় স্লিপে দাঁড়ানো উইয়ান মুল্ডারের হাতে। ৩ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি মুমিনুল।
এরপর অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার জয়। ৫৫ রানের জুটিও গড়েছিলেন তারা। তবে সাবলীল ব্যাটিং করতে পারছিলেন না। মাঝেমধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ করে শান্তর বিরুদ্ধে জোড়া আবেদন হয়। তার একটিতে শেষ পর্যন্ত বিদায় নেন শান্ত।
কেশভ মহারাজের অফস্টাম্পের বাইরে রাখা ভেতরের দিকে ঢোকা বলে দোমনা হয়ে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন শান্ত। প্রথমে হয়তো স্লগসুইপ করার কথা ভেবেছিলেন, পরে ডিফেন্স করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। ৪৯ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক।
অধিনায়ককে হারানোর পর মুশফিককে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় আছেন জয়। দিনের শেষ বেলাটা কাটিয়েছেন কোনো বিপদ ছাড়াই। যদিও মাঝে একবার মুশফিকের বিপক্ষে একবার ডিআরএসের সাহায্য নিয়েছিলেন প্রোটিয়ারা। দিনের ইনিংসের শেষ বলে অল্পের জন্য স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েননি জয়।
সকালে আগের দিনের ৬ উইকেটে ২৪০ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ চার উইকেট হারিয়ে এদিন আরও ১৬৬ রান যোগ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তার মূল কারিগর উইকেটরক্ষক-ব্যাটার কাইল ভেরেইনে। দারুণ এক সেঞ্চুরি তুলে প্রোটিয়াদের দুই শতাধিক লিড এনে দেন তিনি। তবে ভালো সঙ্গ দিয়েছেন মুল্ডারও।
সপ্তম উইকেটে ১১৯ রানের জুটি গড়েন মুল্ডার ও ভেরেইনে। এ জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। মুল্ডারকে স্লিপে সাদমান ইসলামের ক্যাচে পরিণত করেন এই পেসার। ১১২ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন মুল্ডার। পরের বলে মহারাজকে বোল্ড করে দেন হাসান।
এরপর ড্যান পেইডটকে সঙ্গে নিয়ে ৬৬ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন ভেরেইনা। পেইডটকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে এ জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এর আগে ৩২ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন লেজের এই ব্যাটার।
২৯৩ নয় উইকেট হারিয়ে এক প্রান্ত আগলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান ভেরেইনে। সেঞ্চুরির পর দারুণ দুটি ছক্কাও হাঁকান। তবে স্কোরবোর্ডে আর ১৫ রান যোগ হতে মিরাজের বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ভেরেইনে। শেষ পর্যন্ত ১৪৪ বলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।