‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে ওয়াশিংটনের সহযোগিতা নেওয়া হতে পারে’
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে ওয়াশিংটন থেকে কারিগরি সহযোগিতা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, গভর্নর ওয়াশিংটন গেছেন, আমরাও যাচ্ছি। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা আমাদের একটা প্রায়োরিটি (অগ্রাধিকার)। এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য কমিশন গঠনের একটি সিদ্ধান্তের কথা শোনা যাচ্ছে, এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে অলরেডি একটা টাস্কফোর্স আছে এবং গভর্নরের সঙ্গে কথা হয়েছে। এজন্য কিছু কারিগরি সহযোগিতা লাগবে।
কমিশন গঠন করার প্রয়োজন আছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমিশন গঠন করার বিষয়ে আমি কিছু বলব না। অলরেডি একটা টাস্কফোর্স করেছি। এটার জন্য জাতীয় একটা কমিটিও আছে। কমিশন যখন গঠন করবে আমার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে, দেখি তারা কি বলে।
পাচার হওয়া অর্থ কতদিনের মধ্যে ফেরত আসতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা বলা যাবে না। কাজ তো শুরু হয়ে গেছে অলরেডি। গিয়েছে অনেক বছর ধরে, হঠাৎ করে ফেরত আসার বিষয়ে এখন আমার কাছে জানতে চাইছেন। অ্যাকটিভলি কাজ শুরু হয়ে গেছে।
ডিম আমদানির পর বাজারে স্বস্তি এসেছে, কিন্তু সবজির বাজারে এখনো স্বস্তি আসেনি, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সবজি সিজনাল, সবজির বাজারে স্বস্তি আসবে। সবগুলোতেই স্বস্তি আসবে।
বাজারে মানুষ এখনো স্বস্তি পাচ্ছে না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজারে স্বস্তি পাচ্ছে না, আমরা তো চেষ্টা করছি যতটুকু সরবরাহ করা যায়। ওপেন মার্কেটে (খোলা বাজার) আমরা দিচ্ছি, টিসিবি দিচ্ছি, আলাদাভাবেও দেওয়া হচ্ছে। টিসিবি ছাড়াও কৃষি বিপণন করছে। কয়েকটা প্রাইভেট সংস্থা আছে তারা নিজ উদ্যোগে করছে। ওরা নিজেদের অর্থে করছে, তাদেরকেও আমরা এনকারেজ (উৎসাহিত) করছি।
একজন সমন্বয়ক বলেছেন আপনারা সিন্ডিকেট ভাঙতে ব্যর্থ হয়েছেন? সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যর্থ, সফলতার বিষয়ে আমি কিছু বলব না।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত আনতে গঠিত টাস্কফোর্স পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত টাস্কফোর্সের সভাপতি করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে। এই টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, অপরাধ তদন্ত বিভাগ, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের একজন করে উপযুক্ত প্রতিনিধি।
এর আগে ২০২২ সালের ৫ মে এ সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্স গঠন করে তৎকালীন সরকার। পরে ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি এটি পুনর্গঠন করা হয়। ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি পুনর্গঠিত টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এর সদস্য ছিলেন বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান কর্মকর্তা, বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের একজন কমিশনার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং), আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাখার যুগ্ম সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের মহাপরিচালক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্সের মহাপরিচালক, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (ফিনান্সিয়াল ক্রাইম), বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের নির্বাহী পরিচালক। সদস্য সচিব ছিলেন বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের উপপ্রধান কর্মকর্তা।