পারিবারিক সহিংসতা: ৭ মাসে ৩২২ নারীর মৃত্যু

পারিবারিক কলহের জেরে নারীর প্রতি সহিংসতার মাত্রা দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই - মাত্র ৭ মাসে দেশে ৩৬৩টি পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩২২ জন নারী।
আসকের পরিসংখ্যান বলছে, নিহতদের মধ্যে ১৩৩ জন নারী স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন। আবার স্বামীর পরিবারের সদস্যদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জন নারী। এছাড়া নিজ পরিবারের হাতে খুন হয়েছেন আরও ৩৩ জন। অন্যদিকে, সহিংসতার কারণে মানসিক চাপে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন ১১৪ জন নারী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পারিবারিক শিক্ষা, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি, বিচারহীনতা এবং মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব এই সহিংসতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা এবং আইন প্রয়োগে দুর্বলতাকেও বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনায় দেখা গেছে, স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করে স্বামী পালিয়ে যাচ্ছে। সন্তানদের সামনেও স্ত্রীকে খুন করার মতো ভয়াবহ ঘটনাও ঘটছে।
গত ১৪ আগস্ট রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় চার সন্তানের জননী ফাহমিদা তাহসিন কেয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সিফাত আলীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। নিহত কেয়ার পরিবার অভিযোগ করেছে, পারিবারিক কলহের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
এর আগের সপ্তাহেই ৩ আগস্ট টাঙ্গাইলের সখীপুরে সন্তানদের সামনেই স্ত্রী কাকুলি আক্তারকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন মেহেদী হাসান। তবে র্যাব তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাকে সেদিনই গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনার ঠিক ১দিন আগে অর্থাৎ ২ আগস্ট গাজীপুরে মারুফা আক্তার নামে এক পোশাককর্মীকে ঘরে তালাবদ্ধ করে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে তার স্বামীর বিরুদ্ধে।
নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, পরিবারে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শুধু আইন নয়, সমাজ ও পরিবারকেও সচেতন হতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগ ও দ্রুত বিচার না হলে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড আরও বাড়বে।
Comments