এখনো গাজায় উড়ছে ব্রিটিশ গুপ্তচর বিমান, তথ্য দিচ্ছে ইসরায়েলকে

যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি সত্ত্বেও তেল আবিবকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে লন্ডন।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সরকারি সূত্র দ্য টাইমসকে নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাজ্য গাজার উপর দিয়ে গুপ্তচর বিমান উড়িয়ে চলেছে এবং ইসরায়েলের সাথে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি করছে।
কয়েক মাস ধরে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরা সাইপ্রাস দ্বীপে অবস্থিত রয়্যাল এয়ার ফোর্স ঘাঁটি 'আরএএফ আক্রোতিরি'র ভূমিকা নিয়ে সরকারের দিকে প্রশ্ন তুলেছেন। ইসরায়েলের যুদ্ধের সময় এই ঘাঁটি থেকে বিমানগুলো গাজার উপর শত শত নজরদারি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
এসব নজরদারি বিমান উড়ানো সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বারবার দাবি করে আসছে, তারা তথাকথিত 'জিম্মি উদ্ধার'কে সমর্থন করছে।
দ্য টাইমস জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই সপ্তাহেও নিশ্চিত করেছে, গাজার উপর নজরদারি বিমান 'এখনো উড়ছে'।
গাজার উপর বর্তমানে কোন কোন বিমানগুলো মোতায়েন করা হচ্ছে - তা প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
'গণহত্যার এক ঝলক দৃশ্য'
মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটিশ নজরদারি ক্ষমতা সম্পর্কে জ্ঞানসম্পন্ন একটি সূত্র এই বছরের শুরুতে মিডল ইস্ট আইকে বলেছিল, নজরদারি বিমানগুলো ব্রিটেনকে 'গণহত্যার একটি স্পষ্ট দৃশ্য' দিচ্ছে।
সূত্রটি উল্লেখ করেছে, যুক্তরাজ্য ফাইভ আইজ গোয়েন্দা জোটের অংশীদার, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ডও রয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যই মধ্যপ্রাচ্যে 'গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহকারীর এক নম্বর দেশ'।
সূত্রটি আরও উল্লেখ করে, 'ব্রিটেন ঠিকই জানে ওই বিমানগুলোর কারণে গাজায় কী ঘটছে। যে কোনো সাংবাদিকের চেয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভালো।'
৩৫ বছর ধরে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালনকারী প্রাক্তন মেজর জেনারেল চার্লি হারবার্ট দ্য টাইমসকে বলেন, 'জিম্মিদের খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে তারা গোয়েন্দা তথ্য হস্তান্তর করছে - এটা বলা ভালো। কিন্তু বাস্তবে সেই গোয়েন্দা তথ্যগুলো হামাস এবং অন্যান্যদের লক্ষ্যবস্তুতে ব্যবহার করার সম্ভাবনাও কম নয়।'
সাইপ্রাসের 'আরএএফ আক্রোতিরি' বিমানঘাঁটি কী কাজে ব্যবহৃত হয়, তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গোপন থাকে।
এই বছরের শুরুর দিকে মিডল ইস্ট আই রিপোর্ট করেছে, 'সাইপ্রাসের বিমানঘাঁটি ব্যবহার করে ইসরায়েলি বোমারু বিমান কী করছে' - লেবার এমপি কিম জনসনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে বাধা দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।
গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাজ্য এবং ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করেছে, তারা সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছে।
Comments