দীর্ঘ ৪০ বছর ফরাসি কারাগারে থাকার পর মুক্তি পেলেন জর্জ আবদুল্লাহ

ফ্রান্সের দীর্ঘতম বন্দীদের একজন ফিলিস্তিনিপন্থী লেবানিজ কর্মী জর্জেস ইব্রাহিম আবদুল্লাহ ৪০ বছরেরও বেশি সময় কারাগারে থাকার পর শুক্রবার (২৫ জুলাই) মুক্তি পেয়েছেন। দুই কূটনীতিককে হত্যার অভিযোগে এই কারাভোগের পর তাকে লেবাননে পাঠানো হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়ার পর জর্জ আবদুল্লাহ লেবাননের রাজধানী বৈরুতে পৌঁছেছেন। তাকে লেবাননের হেফাজতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এএফপির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, তারা দেখছেন, স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ৪০ মিনিটে ছয়টি গাড়ির একটি বহর ল্যানেমেজান কারাগার থেকে আলোর ঝলকানি সহকারে বেরিয়ে আসে। যদিও তারা ৭৪ বছর বয়সী ধূসর-দাড়িওয়ালা আবদুল্লাহকে এক ঝলকও দেখা যায়নি।
প্যারিসে মার্কিন সামরিক অ্যাটাশে চার্লস রবার্ট রে এবং ইসরায়েলি কূটনীতিক ইয়াকভ বারসিমানটভ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুল্লাহকে ১৯৮৪ সালে আটক করা হয় এবং ১৯৮৭ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও তিনি সর্বদা এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।
কারাগারে থাকেও আবদুল্লাহ কখনো নিজের মতাদর্শের প্রতি দুর্বল হননি, বিশেষ করে তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিরোধ আন্দোলন 'লেবানিজ আর্মড রেভোলিউশনারি ফ্যাকশনস' থেকে নিজেকে দূরে রাখেননি।
এটি একটি মার্কসবাদী দল। ফিলিস্তিনি এবং প্যান-আরব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে এর যোগসূত্র ছিল। তারা লেবাননের মাটি থেকে বিদেশি শক্তি - বিশেষ করে ইসরায়েলি শক্তিকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করেছিল।
বছরের পর বছর ধরে আদালতের একাধিক রায়ে তার মুক্তির সুপারিশ করা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক চাপের কারণে - বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলেরের চাপের কারণে আবদুল্লাহ কারাগারেই ছিলেন।
সম্প্রতি প্যারিসের আপিল আদালত ২৫ জুলাই থেকে তার মুক্তির আদেশ দেয়। শর্তে দেওয়া হয়, তিনি ফরাসি ভূখণ্ড ত্যাগ করবেন এবং আর কখনো ফিরে আসবেন না।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একজন ফরাসি ইতিহাসবিদ ফ্রান্স টোয়েন্টিফোরকে বলেন, 'কারো কারো কাছে তিনি একজন নায়ক, কারো কারো কাছে তা নন।'
Comments