নাইজেরিয়ায় আকস্মিক বন্যায় কমপক্ষে ১৫০ জনের মৃত্যু

নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কৃষিপ্রধান রাজ্য নাইজারের শহর মোকওয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় কমপক্ষে ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোরের দিকে আঘাত হানা প্লাবনের সময় বেশিরভাগ লোকজন ঘুমিয়ে ছিলেন।
রাজ্যের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র ইব্রাহিম হুসেইনি সিএনএনকে বলেছেন, শনিবার (৩১ মে) সকা পর্যন্ত অনেক শিশুসহ ১৫১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
হুসেইনি বলেন, ৩০০০ জনেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধারকারীরা মৃতদেহের সন্ধান চালাচ্ছে।
মোকওয়ার বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সী হাসান আবদুল্লাহি সিএনএনকে জানিয়েছেন, বন্যায় তাদের বাড়ি ডুবে যাওয়ার সময় তিনি বৃদ্ধা মাসহ পরিবারের ৯ জন সদস্য এবং ৪ থেকে ৮ বছর বয়সী দুই ভাগ্নে-ভাতিজিকে হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমার খুব খারাপ লাগছে। আমি কতই না চাইতাম, যদি ওদের জীবিত ফিরিয়ে আনতে পারতাম, কিন্তু কোনোভাবেই সম্ভব নয়...।'
প্রচণ্ড বন্যার কোনো জিনিসপত্রও উদ্ধার করা যায়নি বলে জানান তিনি। বলেন, 'আমরা সবকিছু হারিয়েছি। এমনকি একটি কাপড় এবং জুতাও আমাদের নেই। কোথায় ঘুমাব, আমাদের (থাকার জায়গা) নেই। আমরা প্রচণ্ড যন্ত্রণায় আছি।'
পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির দুর্যোগ ত্রাণ সংস্থা (NEMA) পূর্বের এক ঘোষণায় বলেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে মোকওয়ার কেপেগে আলাকায় বন্যা আঘাত হানে। সেসময় বাসিন্দারা বেশিরভাগই ঘুমিয়ে ছিলেন।
নাইজার রাজ্য সরকার জানিয়েছে, কয়েক ঘণ্টা ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের পর মারাত্মক বন্যার দুর্যোগ শহরের দুটি সম্প্রদায়কে ধ্বংস করে দিয়েছে। ফলে অনেক প্রাণহানি হয়েছে এবং বাড়িগুলো ডুবে গেছে। রাজ্য সরকার ঘটনাটিকে 'দুঃখজনক, হৃদয়বিদারক এবং করুণ' বলে বর্ণনা করেছে।
উত্তর নাইজেরিয়ায় প্রতি বছর বন্যার ঝুঁকি থাকে, যা প্রায়শই মৃত্যু এবং বাস্তুচ্যুতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সিএনএনকে দেওয়া 'NEMA'-এর তথ্য অনুসারে, গত বছর, অঞ্চলজুড়ে কয়েক সপ্তাহের বন্যায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল এবং ৩৮৬০০০ জনের বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
২০২২ সালে যখন নাইজেরিয়া এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা রেকর্ড করেছিল, তখন এই অঞ্চলটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
Comments