রাখাইনে জান্তা জেনারেলকে হত্যা করেছে আরাকান আর্মি: রিপোর্ট

মিয়ানমারের রাখাইনের কিয়াকফিউ বন্দরের আশেপাশে লড়াইয়ের সময় একজন জান্তা জেনারেলকে হত্যা করেছে আরাকান আর্মি। শুক্তবার (৩০ মে) রাখাইনের গণমাধ্যমের বরাতে দ্য ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার ১১ নম্বর ডিভিশনের কৌশলবিদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও মিও অং এবং একজন সেনা ক্যাপ্টেন গুলিবিদ্ধ হন।
রাখাইনের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কিয়াকফিউ শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে কিয়াকফিউ-রাম্রি সড়কের পিয়াং সি কে গ্রামের আশেপাশে এখন লড়াই চলছে। আরাকান আর্মি পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর রক্ষাকারী বেশ কয়েকটি জান্তা অবস্থান দখল করেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবার একটি বিশেষ বিমানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও মিও অং-এর মরদেহ ইয়াঙ্গুনে পাঠানো হয়েছে।
তার পরিবারের পক্ষ থেকে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আমন্ত্রণপত্র অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ৪৫ বছর বয়সী কিয়াও মিও অং মঙ্গলবার দায়িত্ব পালনের সময় মারা যান এবং বৃহস্পতিবার তাকে ইয়াঙ্গুনের মিঙ্গালাডন সামরিক সমাধিস্থলে সমাহিত করা হয়।
ইরাবতির প্রতিবেদন বলছে, কিয়াউকফিউ অঞ্চলে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। সেখানে সামরিক শাসকগোষ্ঠী শহর রক্ষার জন্য বিমান, নৌ জাহাজ এবং স্থল সেনা ব্যবহার করছে।
রাখাইনের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কিয়াকফিউতে বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের বিনিয়োগ রক্ষাকারী চীনা বেসরকারি নিরাপত্তা গোষ্ঠীগুলো আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে ড্রোন হামলায় শাসকগোষ্ঠীকে সহায়তা করছে বলে জানা গেছে। ইরাবতী স্বাধীনভাবে প্রতিবেদনগুলো যাচাই করতে পারেনি।
ইরাবতির প্রতিবেদন অনুসারে, গত ফেব্রুয়ারিতে জান্তা সরকার বেসরকারি নিরাপত্তা পরিষেবা আইন প্রণয়ন করে। এর অধীনে চীনের সশস্ত্র নিরাপত্তা কর্মীদের 'বেইজিংয়ের স্বার্থ রক্ষার জন্য' মিয়ানমারে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে চীনা কর্মীরা কিয়াকফিউতে এসেছেন, যেখানে ভারত মহাসাগরে প্রবেশাধিকার পেতে একটি প্রধান বন্দর তৈরি করছে চীন।
রাখাইনের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, যুদ্ধ যত এগিয়ে আসছে, শাসক প্রশাসকরা কিয়াকফিউ ছেড়ে যাচ্ছেন।
ইউনান প্রদেশকে ভারত মহাসাগরের সাথে সংযুক্তকারী চীনা তেল ও গ্যাস পাইপলাইনগুলো কিয়াকফিউ থেকে শুরু হয়।
২০২৩ সালের নভেম্বরে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরতলির মধ্যে ১৪টি এবং দক্ষিণ চিন রাজ্যের পালেতোয়া শহরতলির জয় লাভ করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি এখনো রাখাইনের রাজধানী সিত্তে দখলের জন্য লড়াই করছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, জান্তা বাহিনী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণাধীন গ্রাম ও শহরগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে অসংখ্য বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি এই বছর পার্শ্ববর্তী ম্যাগওয়ে, বাগো এবং আইয়ারওয়াদি অঞ্চলে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে।
Comments