২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ লাখ কোটি টাকা রেকর্ড রাজস্ব ঘাটতি

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে। এ অর্থবছরে ৪.৬৩ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। অর্থবছরের শুরুতে মূল রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪.৮০ লাখ কোটি টাকা।
এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ধীরগতি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন কমে যাওয়া এবং অর্থবছর শেষে এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলন ও কর্মবিরতি কর্মসূচির কারণে এই ঘাটতি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বড় অঙ্কের এই রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ হলো মাত্রাতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ। তবে তারা এ-ও বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের কারণে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও তা এতটা কমে যাওয়ার কথা ছিল না।
তবে ৩.৭০ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় ধরলেও প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি দাঁড়ায় প্রায় ১.১০ লাখ কোটি টাকা। আর কমিয়ে আনা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ ঘাটতি প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা।
অবশ্য রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বড় ব্যবধান হলেও গত অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তার তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হবে ২ শতাংশের কিছু বেশি।
এনবিআরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত দুই দশকে কোভিড-আক্রান্ত বছর ছাড়া এত কম প্রবৃদ্ধি আর কখনোই হয়নি। মহামারির প্রেক্ষাপটে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
গত কয়েকদিনে কর্মকর্তাদের আন্দোলনকে ইঙ্গিত করে প্রত্যাশিত রাজস্ব আদায় হয়নি উল্লেখ করে এনবিআর-প্রধান বলেন, 'গত কয়েক দিনে রাজস্ব আদায় হোঁচট খেয়েছে।'
তিনি বলেন, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে চলতি মূল্যে জিডিপির আকার হবে ১০ শতাংশের বেশি। 'তাহলে রাজস্ব আদায়েও প্রবৃদ্ধি এই হারে হওয়ার কথা। কিন্তু প্রবৃদ্ধি হবে ২ শতাংশের মতো। তার অর্থ হলো যতটুকু রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা, তা হয়নি।'
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৪৯ শতাংশ, যা গত দেড় দশকে সর্বনিম্ন।
Comments