কেরানীগঞ্জে গণপিটুনিতে যুবক নিহত; পরিবার বলছে পরিকল্পিত হত্যা
ঢাকার কেরানীগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে-এমন অভিযোগ উঠলেও নিহতের পরিবার দাবি করছে, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত হত্যা। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ভোর সাড়ে চারটার দিকে হযরতপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ঢালী কান্দি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত মো. রাজ্জাক শেখ (৩৫) একই ইউনিয়নের মধুরচর এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয়দের দাবি, রাত তিনটা নাগাদ রাজ্জাকসহ কয়েকজন প্রতিবেশী হবি হাওলাদারের বাড়িতে ঢুকে তার স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করে এবং স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতে চায়। এ সময় গৃহস্থদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে রাজ্জাককে ধরে গণপিটুনি দেয়।
তবে ভিন্ন কথা বলছে নিহতের পরিবার। রাজ্জাকের মামাতো বোন শারমিন জানান, রাজ্জাককে ডাকাত বানানোর গল্পটি সাজানো। ভোরে আলামিন নামের এক বন্ধু ডেকে নিয়ে যায়। এরপর পরিকল্পিতভাবে ওরা হত্যা করে, বলেন তিনি। তার অভিযোগ-রাজনীতিগত বিরোধের জের ধরেই আলামিন ও কবির মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে রাজ্জাককে ফাঁসিয়েছে।
নিহতের বোন হনুফার ভাষ্য, রাজ্জাক একজন পেশাদার ড্রাইভার ছিলেন এবং পারিবারিক অস্থিরতার কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তিনি দাবি করেন, হবি, কবির, বোরহান, আফসু, সাত্তারা-ওরা মিলে আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। আমরা কাছে যেতে চাইলে আমাদেরও বাধা দিয়েছে। আমার ভাই বাদলকে মারধরও করা হয়।
অন্যদিকে অভিযুক্ত আলামিনের পরিবারের দাবি সম্পূর্ণ উল্টো। আলামিনের বোন হালিমা জানান, তাকে শত্রুতার কারণে মিথ্যা জড়ানো হয়েছে। ভাই চেয়ারম্যানের বাড়িতে ভাড়ায় থাকে। ডাকাতির কথা শুনে সকালবেলায় এসেছে মাত্র, বলেন তিনি।
এদিকে গ্রামবাসীর একাংশ জানান, রাজ্জাক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে চুরি-ডাকাতির অভিযোগ পূর্বে থেকেই আছে। পারুল বেগম নামের এক স্থানীয় নারী বলেন, রাজ্জাক অপরাধী ছিল। গণপিটুনিতেই তার মৃত্যু হয়েছে, কাউকে দোষারোপ করার কিছু নেই।
এ ঘটনায় গ্রামবাসী মুখ খুলতে অনীহা প্রকাশ করলেও, পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি, তবে ঘটনার তদন্ত চলছে।
Comments