নারী উদ্যোক্তা শিল্পীর সফলতা; মাছ ও সবজি চাষে স্বাবলম্বী চার শতাধিক নারী
সারাদেশে যখন নারীরা পোশাক শিল্প, হস্ত ও ক্ষুদ্র কুঠির শিল্প নিয়ে ব্যাস্ত তখন ভিন্নতা নিয়ে গাইবান্ধা জেলার মনোহরপুর গ্রামে মৎস খামার করে প্রথম নারী মৎস্য উদ্যোক্তা হিসাবে গাইছেন সাফল্যের গান শিল্পী বেগম। শিল্পীর পথ ধরে গাইবান্ধার মনোহরপুর গ্রামের প্রায় চার শতাধিক নারী এখন মাছ চাষের সাথে যুক্ত হয়েছেন। এ নারী উদ্যোক্তা হিসেবে জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক সফল অ্যাকুয়াকালচারে পুরস্কৃত হয়েছে।
পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর (কাজিরবাজার) গ্রামের শিল্পী বেগম প্রায় পাঁচ বছর আগে কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই একটি ছোট পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুর-পাড়ে সমন্বিত শাক-সবজি হিসেবে পেপে, লেবু, লাউ, কলা, কচু শাক, লাল শাকসহ বিভিন্ন রকমের সবজি চাষ শুরু করেন। তার পুকুরে বর্তমানে কাতলা, সিলভার কাপ, বাটা, তেলাপিয়া, সরপুঁটিসহ বিভিন্নজাতের মাছ রয়েছে।
২০২০ সালে স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তর থেকে মাছ চাষের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে শিল্পী বেগম তার মাছ চাষ বাড়াতে শুরু করেন। এখন তিনি ৫টি পুকুরে মাছ চাষ করে বছরে ৩ লাখ টাকার বেশি আয় করেন। এছাড়াও ১০ শতক জমিতে শাকসবজি বিক্রি করে সবমোট বছরে প্রায় সাড়ে তিন লাখ আয় হচ্ছে শিল্পীর। মনোহরপুর গ্রামের, ৪০০ জন মহিলা উদ্যোক্তাকে মাছ চাষের উপর প্রশিণ দিয়েছে শিল্পী। তাদের মধ্যে প্রায় ২০০-৩০০ মহিলা এখন মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তারাও এখন স্বাবলম্বী।
রংপুর কারমাইকেল কলেজে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পড়া গ্রামের সম্পা আক্তার (২৫) তাদের একজন। অনার্স শেষ করে কোনো চাকরি না পেয়ে এক বছর আগে মাছ চাষ শুরু করেন সম্পা।
সম্পা আক্তার ঢাকা জার্নাল কে জানান, মনোহরপুর গ্রামের প্রতিবেশী ভাবী শিল্পী বেগমের কাছে মাছ চাষের প্রশিক্ষন নিয়েছেন।
মাছ চাষ থেকে প্রতি বছর ৬০-৭০ হাজার আয় হচ্ছে। শিল্পী বেগমের স্বামী মো. আব্দুল হাদি সরকার বলেন, আমার স্ত্রী প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর থেকে মাছ চাষ শুরু করি। তখন থেকে আমি স্ত্রীকে সহযোগিতা করে আসছি।
পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের নারী উদ্যোক্তা শিল্পী বেগম বলেন, মৎস্য ও পুকুর পাড়ে সবজি চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ এবং অর্থনৈতিক ভাবেই লাভবান হয়েছি। আমি এ গ্রামের চার শতাধিক নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তারাও এখন আমার মত পুকুরে মাছ চাষ ও পুকুর পাড়ে শাক-সবজি আবাদ করে মাসে অর্থ উপার্জন করছে।
গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাশেদ জানান, শিল্পীই একমাত্র নারী উদ্যোক্তা যে এ বছর ২০২১-২০২২ এ জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক একজন সফল মৎসচাষী হিসাবে অ্যাকুয়াকালচারে পুরস্কৃত হয়েছে। তিনি গ্রামের অনেক নারীকে মাছ চাষের প্রশিক্ষন দিচ্ছেন।
Comments