উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শ্মশান দীপাবলি উৎসব পালন হবে বরিশালে

বরিশালে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় 'শাশান দিপালী' উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল রবিবার। পরদিন ২০ অক্টোবর (সোমবার) উদযাপিত হবে শ্রীশ্রী শ্যামা পূজা। দুই শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবকে কেন্দ্র করে এখন সাজ সাজ রব বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে।
লোকমুখে শোনা যায় ১৯২৭ সাল থেকে এই মহাশ্মশানে দীপাবলি উৎসব পালিত হয়ে আসছে। সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসব শুরু করেন। প্রয়াতদের সমাধি পছন্দের খাবার এবং অন্যান্য উপাচারে সাজানো হয়।
ঐতিহ্যবাহী এই মহাশ্মশানে শ্রদ্ধা জানাতে নেপাল ও ভারতসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারও মানুষ জড়ো হয়। ৭০ হাজারের অধিক সমাধির মহাশ্মশানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন ও আয়োজকদের পক্ষ থেকে গড়ে তোলা হয়েছিল নিরাপত্তা বলয়।
'উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শ্মশান দীপাবলি উৎসব' পালিত হয় বরিশাল নগরীর কাউনিয়া মহাশ্মশানে। প্রতি বছর এই উৎসবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রয়াত প্রিয়জনদের আত্মার শান্তি কামনায় প্রদীপ জ্বালান, সমাধি সাজান এবং ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী প্রার্থনা করেন।
এটি ভূতচতুর্দশীর পুণ্যতিথিতে অনুষ্ঠিত হয়। এবং এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। স্থানীয় মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি বলেছে—স্বজন না থাকা প্রায় হাজার খানেক মঠে কমিটির পক্ষ থেকে আলোকসজ্জা ও মোমবাতি জ্বালানো হবে।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি অসিম কুমার দাস মুরালি ও সাধারণ সম্পাদক বিজয় ভক্ত শ্মশান দীপালি ও কালীপূজা উদযাপনে সকল ধরনের প্রস্তুতি তারা সম্পন্ন করেছেন। দীপাবলি উৎসবকে কেন্দ্র করে সবার অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা ও করেছেন। সে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, সাদা মনের মানুষ বিজয় কৃষ্ণ দে, সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীণ আইনজীবী এডভোকেট মানবেন্দ্র বটব্যাল সহ অন্যান্যরা।
কমিটি জানিয়েছে কাউনিয়া মহাশ্মশানটি প্রায় ৫ একর ৯৬ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এখানে পুরনো-নতুন মিলিয়ে প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি সমাধি আছে—যার ফলে এ উৎসবকে উপমহাদেশের বৃহত্তম শ্মশান-দীপাবলি হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
এছাড়াও রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা সত্যানন্দ দাশ, জীবনানন্দ দাশের পিতামহ সর্বানন্দা দাশ, দেবেন্দ্রনাথ ঘোষ, কালিচন্দ্র ঘোষ, মনোরমা বসু, অশ্বিনীকুমার দত্ত সহ অসংখ্য গুনিজনের সমাধী রয়েছে এখানে।
মহাশ্মশান প্রাঙ্গণে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র্যাব, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি শ্মশান কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
Comments