ফরিদপুরে ৫ লাখ ২৮ হাজার শিশুকে দেয়া হবে টাইফয়েড টিকা

টাইফয়েড জ্বর থেকে শিশুদের রক্ষায় সারাদেশে শুরু হতে যাওয়া বিশেষ টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলার ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৮৮ জন শিশুকে বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হবে। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মাসব্যাপী এই বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি চলবে।
এই উপলক্ষে বুধবার (৮ ই অক্টোবর) ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে একটি অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় কর্মসূচি বাস্তবায়নে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করা হয় এবং টাইফয়েড জ্বরের ভয়াবহতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই টিকাদান কর্মসূচি সফল করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, "শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ ২৮ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সব অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে একটি শিশুও টিকার আওতার বাইরে না থাকে।"
সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান বলেন, "টাইফয়েড জ্বর বাংলাদেশে একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এর প্রাদুর্ভাব ও জটিলতা বেশি। এই রোগ থেকে সুরক্ষার জন্য টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ। এটি এক ডোজের ইনজেকটেবল টিকা, যা শিশুকে দীর্ঘদিনের জন্য সুরক্ষা দেবে।" তিনি জানান, জেলায় টিকাদানের জন্য সব ধরনের সরঞ্জাম ও জনবল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সভায় ইউনিসেফ এর বরিশাল বিভাগীয় প্রধান আনোয়ার হোসেন জাতীয় এই কর্মসূচিতে ইউনিসেফের কারিগরি ও কৌশলগত সহায়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন এই জীবনরক্ষাকারী টিকার বার্তা সমাজের প্রতিটি স্তরে পৌঁছে যায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ক্যাম্পেইন সফল করতে প্রথম ১০ দিন জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি) শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। পরবর্তী ৮ দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত বা বিদ্যালয় বহির্ভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে (স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক) টিকা প্রদান করা হবে। টিকা নিতে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করা আবশ্যক হলেও, কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে নিবন্ধন ছাড়াই কেন্দ্রে আসা কোনো শিশু টিকা থেকে বঞ্চিত হবে না।
Comments