গ্রাহকের প্রায় ২০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ভুয়া এনজিও

সীমান্তবর্তী হাকিমপুর উপজেলায় আই.ডি.এফ.এন সংস্থা নামের একটি ভুয়া এনজিও গ্রাহকের প্রায় ২০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। ঋণ নিতে গিয়ে অফিসে তালা ঝুলানো দেখে মাথায় হাত পড়েছে প্রতারিত গ্রাহকদের।
রবিবার (সেপ্টেম্বর ১৪) বিকেল ৩টায় হাকিমপুর উপজেলার সাতকুড়ি এলাকায় অবস্থিত অফিসে ঋণ নিতে তালা ঝুলানো দেখে গ্রাহকরা। পরে কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফোন নাম্বার বন্ধ পেয়ে প্রতারিত গ্রাহকরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত ৪ই সেপ্টেম্বর বল্টু চেয়ারম্যান নামের এক ব্যক্তির চাতাল সংলগ্ন একটি অফিস ভাড়া নেয় এনজিওটি। ভাড়ার নেওয়ার পর গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সুদ বিহীন ঋণ ও ৪০ প্রকারের কাজ দেওয়ার কথা বলে সদস্য ভর্তি করে নেয় এনজিওটি। এরপর সদস্য ভর্তি ফ্রি বাবদ ২৫০ টাকা ও সঞ্চয় প্রত্যকজনের থেকে ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয় এনজিওটি। আজ রবিবার দুপুরে ঋণ দেওয়ার কথা ছিলো এনজিওর তবে ঋণ নিতে এসে গ্রাহকরা দেখেন অফিসে তালা ঝুলানো।
হাকিমপুর উপজেলার আলীহাট ইউনিয়নের সাদুরিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী মালেকা বিবি (৪৭) নামের একজন বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমাদের এলাকায় গিয়ে তারা বলে সুদ বিহীন ঋণ দিবে এবং ৪০ ধরনের কাজ শিখাবে সেজন্য সদস্য দরকার। পরে আমি নিজেই সদস্য হয় এবং ধারদেনা করে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে এসে তাদেরকে সঞ্চয় দেয়। তারা আজকে ঋণ দিবে বলে অফিসে আসতে বলেছিল দুপুরে এসে দেখি অফিসে তালা ঝুলানো। ফোনে ফোন দিলেও বন্ধ দেখায়। আমরা তো গরীব মানুষ কি হবে এখন।
ভুক্তভোগী আরো কয়েকজন বলেন,আমাদেরকে ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে এনজিও টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে। আমরা এখন অসহায় প্রশাসেন কাছে অনুরোধ করছি আমাদের টাকা যেনো উদ্ধার হয়।
বাড়ির মালিক রিয়াজুল বলেন,৪ই সেপ্টেম্বর আমার কাছে দুইজন এসে অফিস ভাড়া চায়। আমি তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে চাইলে তারা বলে আমাদের এয়িরা ম্যানেজার স্যার এসে আপনার সাথে চুক্তিনামা করবে এই বলে তারা রুমে উঠে। আজ আমার সাথে তাদের ভাড়ার চুক্তিনামা হওয়ার কথা কিন্তু সকাল থেকে ফোন দিচ্ছি ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। পরে এসে দেখি রুমে তালা লাগানো।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হক বলেন, আজ বিকেলে প্রতারিত হওয়া কিছু মানুষ থানায় এসে একটি এনজিওর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন,আমাদের উপজেলায় যেসব এনজিও আছে তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে এবং নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে কোথাও যদি ভুয়া এনজিও থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Comments