চাঁদপুর শহরে ফুটপাতে চিকেন চাপ বিক্রি করে মাসুমের ভাগ্য বদল

চাঁদপুরে ফুটপাতে চিকেন চাপ বিক্রি করে মাসুম ভূইয়ার ভাগ্য বদল হয়েছে। তার দেখাদেখি অনেক যুবকই এখন ফুডকার্ট ব্যবসায় মনযোগী হচ্ছেন। সততা ও ধৈর্য্য থাকলে যে অল্প পুঁজিতেও নিজেকে সফল করা যায় মাসুম যেনো তার প্রতিচ্ছবি।
৭ সেপ্টেম্বর রোববার এক সাক্ষাৎকারে নিজের সফলতার গল্প করেন মাসুম।
তিনি জানান, আমি কুমিল্লার ছেলে এবং প্রবাস ফেরত। পূর্বে তেমন কোন সফলতা না থাকায় চাঁদপুরে ২০১৯ সালে একবার মেলা চলাকালীন সময়ে আমি ফুটপাতে চাপ আড্ডা নামে ফুডকার্ট খুলে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিণারের পেছনে চিকেন চাপ বিক্রি শুরু করি। ৬০ টাকার ওই চিকেন চাপের সাথে প্লেটে দিতাম ১ পিস ভাজা মুরগী, ২টি লুচি ও ২ পদের সস ও সালাদ। আর সে শুরুর পর থেকে আমাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে আমার এখানে ৮ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। যদিও সময়ের ব্যবধানে ৬০ টাকার চাপের প্লেটারটি বর্তমানে ১১০ টাকা এবং প্রথম বারের ২টি লুচি বাদে অতিরিক্ত লুচি নিলে প্রতি পিচ ৫ টাকা করে নিচ্ছি। তবুও সবার দোয়ায় আমার তৈরিকৃত চিকেন চাপ খেতে ভোজনরসিকদের ভীড় লেগেই থাকে।
ভোজনরসিক আরিফ জানান, মাত্র ১১০ টাকায় পেট ভরে নাস্তার জন্য এখানকার চিকেন চাপ প্লেটারটি দারুন। তার ওপর এদের সস গুলোও দারুন। অল্প সময়ে অর্ডার ডেলিভারি দেয় বলে প্রায়ই এখানে বন্ধুবান্ধবসহ চিকেন চাপ খেতে আসি।
মাসুম ভূঁইয়ার চাপ আড্ডায় কাজের খোজ পেয়ে খুশি তার কর্মীরাও। চাপ আড্ডার কর্মচারীরা জানান, মাসিক সেলারি ভিত্তিতে এখানে কাজ করি। বিকালে পর কাজ শুরু হয় বলে এটা পার্ট টাইম জবের মতো অনেকটা। তার ওপর এই সময়ে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকায় কাজে এলে মনও বেশ চাঙ্গা থাকে।
এ বিষয়ে চাপ আড্ডার উদ্যোক্তা মাসুম ভূঁইয়া বলেন, মাসিক হিসাবে দিনে এখানে গড়ে ২৫০+ চিকেন চাপ বিক্রি করছি। প্রতিদিন বিকাল ৪টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে আমার এই চাপ তৈরি ও বেচাবিক্রি। বর্তমানে আমার এখানে এখানে একসাথে ৩০ জন বসে গরম গরম চিকেন চাপ ও লুচি খেতে পারেন। কেউ চাইলে অর্ডার দিলে পার্সেলও নিতে পারেন।
মাসুম ভূঁইয়া বলেন, এক সময়ের পরিত্যাক্ত স্থান ছিলো শহীদ মিণারের পেছনের এই ফুটপাতের অংশটি। পরবর্তীতে আমি যখন স্থানটি পরিষ্কার করে চিকেন চাপ বিক্রি শুরু করি। এরপরই যেনো এই স্থানটি নতুন রূপে পরিচিতি পেয়েছে।এখন নিয়মিতই এখানে বসে ভোজনরসিকদের মিলনমেলা। তাছাড়া চাপ আড্ডায় প্রতিদিনের রান্না শেষে তেল ফেলে দেয়ায় এর খাবার ভোজনরসিকদের মুখোরোচককে দারুনভাবে আকর্ষিত করেছে। দেশে থেকেই যে পরিশ্রম ও একাগ্রতা রাখলে পরিবারের অর্থের যোগান দেয়া কঠিন কিছু নয় আমি সে দৃষ্টান্তই স্থাপন করে যেতে চেষ্টা করছি।
Comments