সিলেটের সাদাপাথর এখন ‘বিরাণভূমি’, প্রশাসন যেন নিরব দর্শক!

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র 'সাদা পাথর'। সে এলাকাটি এখন লাগামহীন পাথর লুটপাটের কবলে পড়ে প্রায় বিরাণভূমিতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে ধলাই নদের উৎসমুখে ভেসে আসা বিপুল পরিমাণ পাথর প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত নৌকায় করে লুট করে নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন রাতদিন চলছে পাথর আর বালু উত্তোলন। নদীতীর খুঁড়ে ও স্রোতের নিচ থেকে স্তরে স্তরে পাথর তুলছে লুটকারীরা। বিজিবি ফাঁড়ি ও জিরোপয়েন্ট পেরিয়ে এই কর্মকাণ্ড হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও স্বীকার করা হয়েছে, একা তাদের পক্ষে এটি ঠেকানো সম্ভব নয়।
এদিকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করেছে বিএনপি।
সাদা পাথর এলাকাটি ২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢলের পর গঠিত হয়। তখন উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পাঁচ একর জায়গাজুড়ে প্রায় ২০ ফুট পুরু পাথরের স্তর সংরক্ষিত করা হয়। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে এলাকাটি জনপ্রিয়তা পায়। সেই পাথরকেই বর্তমানে 'মব স্টাইলে' লুট করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের চেরাপুঞ্জি ও লুংলংপুঞ্জি পাহাড়ি অঞ্চল থেকে বর্ষায় ভেসে আসা এ ধরনের পাথর স্থাপত্য কাজে ব্যবহৃত হয় এবং এর বাজারমূল্য অত্যন্ত বেশি। স্থানীয়দের ধারণা, মাত্র দুই সপ্তাহে শত কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে।
এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, "সাদা পাথর এলাকা থেকে পাথর উত্তোলনের ভিডিও আমি দেখেছি। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা পরিদর্শক দল পাঠিয়েছি এবং পুলিশ-বিজিবির সমন্বয়ে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
তবে প্রশাসনের সামনেই দিনের আলোয় চলা এই লুটপাট বন্ধে দৃশ্যমান কোনো কার্যকর পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি। সাদা পাথর যেন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
Comments