চোখের জলে বিদায়: উক্য চিং মারমার শেষযাত্রায় শোকের ছায়া

রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া খ্যংদং পাড়ায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত উক্য চিং মারমার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৭ম শ্রেণির ছাত্র উক্য চিং মারমা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বাড়িতে তাঁর নিথর দেহ পৌঁছালে শোকের মাতমে ভরে ওঠে পুরো এলাকা। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পাড়াপ্রধান, মসজিদের ইমাম, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসে ভিড় করেন তাঁদের বাড়িতে। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে মরদেহ স্থানীয় শ্মশানে দাহ করা হয়। এসময় পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে স্বজনদের কান্নায়।
উক্য চিং মারমার প্রাক্তন শিক্ষিকা, বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষক শারমিন আক্তার জানান, "উক্য চিং আমার প্রিয় ছাত্রদের একজন ছিল। অত্যন্ত মেধাবী ও স্বপ্নবাজ একটি শিশু ছিল সে। বড় কিছু হওয়ার লক্ষ্যেই তাঁকে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করানো হয়েছিল।"
বাঙ্গালহালিয়া বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ফারুক আহমেদ বলেন, "উক্য চিং মারমা খুবই ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। আমরা সবসময় ওর ব্যবহার ও আচরণে মুগ্ধ ছিলাম। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।"
স্থানীয় পাড়া প্রধান (কার্বারী) ক্যচিংমং মারমাও উপস্থিত হয়ে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি গ্রামে পৌঁছালে পুরো এলাকায় আহাজারি শুরু হয়। দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ ছুটে আসেন প্রিয় উক্য চিংকে শেষবারের মতো এক নজর দেখতে। সবাই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, এত অল্প বয়সে এমন মর্মান্তিক পরিণতি হতে পারে।
Comments