দুই মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্ষমা চাইবে ভারত : মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী

আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই ভারত আবারও আলোচনার টেবিলে ফিরবে এবং 'সরি' বলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে চাইবে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক। তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা, আর ভোক্তার কথাই শেষ কথা।
মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) লুটনিক বলেন, 'আমি মনে করি, এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই ভারত আলোচনার টেবিলে আসবে। তারা দুঃখ প্রকাশ করবে এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটা চুক্তি করতে চাইবে। আর মোদি আসলে কিভাবে চুক্তি হবে তা ঠিক করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।'
লুটনিকের অভিযোগ, ভারত তার বাজার উন্মুক্ত করতে চায় না, রাশিয়ার কাছ থেকে কেনাকাটা বন্ধ করতেও রাজি নয়, আবার ব্রিকস জোটও ছাড়তে চাইছে না।
তিনি বলেন, 'তারা আসলে রাশিয়া আর চীনের মাঝখানে একটা স্বরবর্ণের মতো। যদি এমন কিছুই হতে চাও, হও। হয় ডলার ও তোমার সবচেয়ে বড় ক্রেতা আমেরিকাকে সমর্থন করো, নয়তো ৫০ শতাংশ শুল্ক মেনে নাও।'
এদিকে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল চলতি মাসের শুরুতে আশাবাদ প্রকাশ করেছিলেন যে নভেম্বরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি (বিটিএ) চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে। তবে ২৫ আগস্ট মার্কিন আলোচক দল নিউ দিল্লি সফর স্থগিত করার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে নতুন কোনো বৈঠকের ঘোষণা আসেনি। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে, তা প্রত্যাহারই আলোচনার পুনরায় শুরু হওয়ার মূল শর্ত।
যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জানিয়ে লুটনিক জোর দিয়ে বলেন, 'আমরা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা। চীনারা আমাদের কাছে বিক্রি করে, ভারতীয়রাও আমাদের কাছে বিক্রি করে। তারা নিজেদের মধ্যে বিক্রি করতে পারবে না। এটাই বাস্তবতা। শেষ পর্যন্ত সবাইকে আবার ভোক্তার কাছেই ফিরতে হয়। কারণ আমরা সবাই জানি—শেষ পর্যন্ত ক্রেতাই সব সময় সঠিক।'
সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়া ও চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠককে 'দম্ভ' আখ্যা দেন লুটনিক। তুলনা টেনে তিনি বলেন, 'কানাডায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। তারা পাল্টা শুল্ক বসিয়েছিল। তখন তাদের জিডিপি নেমে গিয়েছিল মাইনাস ১.৬ শতাংশে, বেকারত্ব বেড়ে গিয়েছিল ৮ শতাংশের দিকে। শেষে (কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক) কারনি বাধ্য হয়ে সেই পাল্টা শুল্ক তুলে নিয়েছেন। শুরুতে দম্ভ দেখাতে ভালো লাগে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যবসার স্বার্থেই সবাইকে আমেরিকার সঙ্গে চুক্তিতে আসতে হয়।'
Comments