ভাড়াটে যোদ্ধা বহনকারী আমিরাতের বিমান উড়িয়ে দিল সুদানের বাহিনী, নিহত ৪০

সুদানের বিদ্রোহী আধাসামরিক বাহিনী 'আরএসএফ'-এর জন্য অস্ত্র ও ভাড়াটে যোদ্ধা বহন করা সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বিমান ধ্বংস করে দিয়েছে সুদানের বিমান বাহিনী। রাজধানী দারফুরে আমিরাতের বিমানটি অবতরণের পরই এটিকে উড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে বিমানে থাকা ৪০ জনের সবাই নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৬ আগস্ট) দারফুরের নায়লা বিমানবন্দরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। বিমানটিতে যাত্রীদের সবাই ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ কলম্বিয়ার নাগরিক, যারা ভাড়াটে যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছিলেন।
সুদানের সেনাবাহিনীর সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছেন, ধ্বংস হওয়া কার্গো বিমানটি যে আমিরাতের সেনাবাহিনীর—সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত।
এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় আরএসএফ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানিয়েছেন, নিহত সেনাদের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন তিনি।
জানা গেছে, পারস্য উপসাগরে আমিরাতের একটি নৌ-ঘাঁটি থেকে রওনা হয়েছিলো সামরিক ওই কার্গো বিমানটি। কিন্তু নায়লা বিমানবন্দরের কাছাকাছি এসে রানওয়ে স্পর্শ করার পরপরই বিস্ফোরক রকেট নিক্ষেপ করা হয় এটিকে লক্ষ্য করে। ধ্বংস হওয়া বিমানটিতে বেশ কিছু সামরিক সরঞ্জাম ছিলো। ভাড়াটে সৈন্যসহ এসব সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছিল আরএসএফের জন্য।
সুদানে বর্তমানে যে সরকার ক্ষমতাসীন আছে, সেনাবাহিনী তাদের সমর্থন দিচ্ছে। দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত আরএসএফকে অস্ত্র, সেনা ও অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। এমনকি কলম্বিয়ার ভাড়াটে সেনাদের আরএসএফের জন্য রিক্রুট করা এবং পাঠানোর কাজও করছে আমিরাত। আবুধাবি অবশ্য এই অভিযোগ পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
তবে জাতিসংঘ সুদানের গৃহযুদ্ধে কলম্বিয়ান ভাড়াটে সেনাদের উপস্থিতির ব্যাপারটি স্বীকার করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ দিক থেকে সুদানে আরএসএফের হয়ে লড়াই করছেন কলম্বিয়ান ভাড়াটে সেনারা।
২০২৩ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হয় আধাসামরিক আরএসএফ বাহিনী। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবিক সংকটের একটি। নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার বেসামরিক নিহতের পাশাপাশি লাখ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
Comments