চাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণে বয়সসীমা ৩০, বাড়লো পদসংখ্যা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে অংশগ্রহণের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে ছাত্র প্রতিনিধিত্বকে অধিক কার্যকর ও যুগোপযোগী করতে গঠনতন্ত্রে আনা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, শিক্ষার্থীদের চাহিদা, অধিকার ও সমস্যাগুলো যথাযথভাবে তুলে ধরার পাশাপাশি সমাধান প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতেই এ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫৯তম সিন্ডিকেট সভায় সংশোধিত এ গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়।
নতুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, চাকসুর কার্যনির্বাহী কমিটিতে মোট ২৮টি পদ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩টি কার্যকরী ও ৫টি নির্বাহী সদস্য পদ। পূর্বের গঠনতন্ত্রে যেখানে মোট পদ ছিল ১৮টি, সেখানে নতুন কাঠামোয় যুক্ত হয়েছে আরও ১০টি পদ। নির্বাহী সদস্যের সংখ্যা ১০টি থেকে কমিয়ে ৫টি করা হয়েছে।
নতুনভাবে যুক্ত হওয়া পদগুলো হল- গবেষণা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, দপ্তর ও ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক এবং সহকারী সম্পাদক পদ। এর মধ্যে দপ্তর সম্পাদক পদটি পুরুষ এবং ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এছাড়াও পুরনো সমাজসেবা সম্পাদক এবং উপ-সমাজসেবা সম্পাদক পদ দুটি রূপান্তর করে সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এবং সহ-সম্পাদক পদ করা হয়েছে।
এ গঠনতন্ত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, নির্বাচনে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ও আবাসিক হল সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরাই ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবেন। স্নাতক, মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা বয়স ৩০ বছরের নিচে হলে অংশ নিতে পারবেন। তবে কোনো শিক্ষার্থী যদি এমফিল বা পিএইচডি পর্যায়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন, তাহলে তার সদস্যপদ বাতিল বলে গণ্য হবে। অধিভুক্ত কলেজ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, সান্ধ্যকালীন, এক্সিকিউটিভ, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট এবং ভাষা কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন জানান, অনুমোদিত গঠনতন্ত্র হাতে পাওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
এই গঠনতন্ত্রের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দীন মহসিন বলেন, বর্তমান প্রশাসন এমফিল ও পিএইচডি গবেষকদের দাঁড়ানোর সুযোগ রেখে, এবং বয়সসীমা ৩০ এর মধ্যে বেঁধে দিয়ে আসলে কি কোনো বিশেষ সংগঠনের জন্য রাস্তা পরিষ্কার করে দিচ্ছে কিনা এই বিষয়ে আমরা সন্ধিহান। এমন নিয়মে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব কি না, তা নিয়ে গভীর সন্দেহ পোষণ করছি। আমরা চাই, ছাত্রসমাজের প্রকৃত প্রতিনিধিরাই যেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক নীতিতে নয় বরং ন্যায্যতার ভিত্তিতে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের অনেকগুলো দাবি ছিল সেগুলো প্রশাসন মানে নাই। প্রশাসন হয়তোবা সবার দাবিগুলোকে প্রায়োরিটি দিতে গিয়ে আমাদের সবগুলো দাবি মানতে পারে নাই। আমাদের অনেকগুলো সম্পাদকীয় প্রস্তাবনা ছিল। সেই প্রস্তাবনা গুলো মানা হয়নি। সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাবনা ছিল রানিং স্টুডেন্ট হওয়া, প্রশাসন সেখানে রানিং স্টুডেন্টদের সাথে এমফিল পিএইচডি কে এড করেছে। এটা তো অবশ্যই আমাদের প্রস্তাবনার বাহিরে গিয়ে ওনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবং ওনারা ওনাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমাদের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, তবে ব্যাখ্যা আমাদের সবার মনঃপুত হয়নি। যার কারনে আমরা আবারও আমাদের দাবির পক্ষেই ছিলাম।
Comments