মধ্য বরগুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজও হয়নি নতুন ভবন

বরগুনায় ছাদের ধসে পড়া বিম থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়টিতে হয়নি একটা নতুন ভবন। ৭ বছর ধরে পাঠদান চলছে একটি টিনের ঝুপড়িতে। প্রচণ্ড গরম ও বর্ষা মৌসুমের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশেই মানবেতর সময় কাটাচ্ছে শিশু শিক্ষার্থীরা।
১৯৭৩ সালে স্থাপিত বরগুনা পৌর শহরের আমতলা রোডে অবস্থিত মধ্য বরগুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। জড়াজীর্ণ একটি ভবনে চলছিল শিক্ষার্থীদের পাঠদান। ২০১৯ সালের ৩ মার্চ ক্লাস চলাকালীন সময়ে প্রাক প্রাথমিকের শ্রেণিকক্ষের ছাদের বিম ধ্বসে পড়ে ছোট ছোট শিশু শিক্ষার্থীদের বেঞ্চের উপরে । অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় শিক্ষার্থীরা। পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয় বিদ্যালয় ভবনটি। সেই থেকে কাঠ ও টিনের চালা দিয়ে নির্মিত একটি ঝুপড়ি ঘরে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। দীর্ঘ ৭ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো বরাদ্দ পায়নি নতুন ভবন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাঠ ও টিনের চালা দিয়ে নির্মিত ঝুপড়ি ঘরটিতে বৈদ্যুতিক পাখা থাকলেও প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা। বর্ষা মৌসুমেও নেই স্বস্তি। টিনের চালার বিভিন্ন জায়গা দিয়ে অঝোড়ে পড়তে থাকে বৃষ্টির পানি। ভালো পাঠদান হলেও এসব সমস্যার কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। দূর দুরান্তের স্কুলে গিয়ে ভর্তি হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা বেগম বলেন, ২০১৯ সালের ৩ মার্চ পাঠদান কালে জড়াজীর্ণ বিদ্যালয় ভবনটির ছাদের বিম ভেঙে পড়লে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায় প্রাক প্রাথমিকের ছোট ছোট শিশুরা। সেই থেকে বিদ্যালয়টিকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। প্রায় ৭ বছর অতিবাহিত হতে চললেও মেলেনি নতুন ভবন। ভবনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অসংখ্যবার অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, নানাবিধ সংকটে পড়ে আছে বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়ের ৩২ শতাংশ জমির ২২ শতাংশ জমিদাতারা বুঝিয়ে দিলেও ১০ শতাংশ এখনো রয়েছে বেদখল হয়ে। এই ২২ শতাংশের মধ্যে রয়েছে জমি দাতাদের ব্যক্তিগতভাবে নির্মিত একটি মসজিদ। পর্যাপ্ত খেলাধুলার জায়গা না থাকায় খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের ঝুপড়ি ঘরটি বর্তমানে পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থী। অনতি বিলম্বে এখানে একটি পাকা ভবনের দাবি জানাচ্ছি।
সহকারী শিক্ষক সেলিনা বলেন, টিনের একটি ঝুপড়ি ঘর হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া প্রায়ই এখানে ঘটছে চুরির ঘটনা । সম্প্রতি বিদ্যালয়ের টিনের বেড়া ছুটিয়ে ৪টি বৈদ্যুতিক পাখার মধ্যে ৩টি পাখা ও ৪টি এনার্জি বাল্ব চুরি করে নিয়ে গেছে। শিক্ষার্থীর অভিভাবক সোয়েব বলেন, ছাদের বিম ভেঙে সেদিন অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলো শিশুরা। এখানে একটি ভবন অত্যন্ত জরুরী।
বরগুনা সদর উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও মধ্যবরগুনা স. প্রা. বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. শওকত আলী খান বলেন, একাধিক প্রকল্পে আমরা এ বিদ্যালয়টির নাম তালিকাভুক্ত করেছি। এছাড়া অধিদপ্তরকেও অভিহিত করেছি। আমি আশাবাদী, খুব শীঘ্রই এই মধ্যবরগুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন হবে।
Comments