ইরানের সেই টিভি উপস্থাপিকা সাহসিকতার পুরস্কার পেলেন

গেল ১৬ জুন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইবির ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ঠিক সেই সময় টিভিতে লাইভে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বলছিলেন উপস্থাপিকা সাহার এমামি। তখনই প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ। ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে টিভি স্টেশনটিতে। এতে প্রাণ হারান বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী। কিছু সময় পর বন্ধ হয়ে যায় চ্যানেলটির সম্প্রচার।
হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবারও লাইভ অনুষ্ঠানে ফিরে আসেন উপস্থাপিকা এমামি। তার এই সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাকে অপরাজেয় ও সাহসী হিসেবে আখ্যা দেয় বহু মানুষ।
এই দৃঢ়তা ও সাহসিকতার জন্য ২০২৫ সালের সাইমন বলিভার জাতীয় সাংবাদিকতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এমামি। তার সঙ্গে পুরস্কৃত হয়েছেন আইআরআইবি-র আরও দুই সংবাদকর্মী, নিমা রেজাপুর ও মাসুমেহ আজিমিকে। ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে শনিবার (২৮ জুন) 'জাতীয় সাংবাদিক দিবস' উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এই পুরস্কার ঘোষণা করেন।
সাহার এমামির পক্ষে এবং নিহতদের পরিবারের উদ্দেশে পুরস্কার গ্রহণ করেন ভেনেজুয়েলায় নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত আলি চেগিনি।
এ সময় মাদুরো বলেন, 'এই পুরস্কারের মাধ্যমে সাহসী ইরানি নারী সাহার এমামি এবং তার সহকর্মীদের প্রতি সম্মান জানানো হলো। সত্য প্রকাশের জন্য তারা যেভাবে কাজ করেছেন, তা এই কঠিন সময়ে ইরানি জনগণের প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছে।'
প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইরানের ওপর ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের চালানো সাম্প্রতিক হামলার কঠোর সমালোচনা করেন এবং ইরানি জনগণ, নেতৃত্ব ও সেনাবাহিনীর অটল অবস্থানের প্রশংসা করেন।
এদিকে উপস্থাপিকা এমামি সাহসিকতার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাকে নিজের গোল্ড মেডেল উৎসর্গ করেন ইরানের অলিম্পিক জয়ী শুটার জাভাদ ফরৌঘি। ইরানের নারী ও পরিবার বিষয়ক উপ-রাষ্ট্রপতি বলেন, 'ইরানি নারীর সাহসের প্রতীক এমামি।'
সাহার এমামি মূলত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করলেও ২০১০ সালে সংবাদ উপস্থাপনায় আসেন। তিনি ইরানের সরকারি চ্যানেলে খবর উপস্থাপনা করে দেশজুড়ে পরিচিতি পান।
Comments