গাজা অভিমুখী একটি ত্রাণবাহী জাহাজ দখলে নিয়েছে ইসরায়েল

গাজার ক্ষুধার্ত জনগণের জন্য ত্রাণ বহনকারী জাহাজ 'ম্যাডলিন'কে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেয়নি ইসরায়েল। খবর আলজাজিরার।
আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) উদ্যোগে ইতালির সিসিলি থেকে যাত্রা শুরু করা জাহাজটি আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকেই ইসরায়েলি বাহিনীর হস্তক্ষেপে আটক হয়েছে। বর্তমানে এটি ইসরায়েলের আশদাদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, 'ম্যাডলিন' জাহাজকে আটক করে নিরাপদে উপকূলে আনা হচ্ছে। এক পোস্টে তারা একে 'সেলফি ইয়ট' এবং অংশগ্রহণকারী কর্মীদের 'সেলিব্রিটি' হিসেবে উল্লেখ করে অভিযুক্ত করে বলেন, এই কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হচ্ছে গণমাধ্যমে প্রচারের আলো নিজেদের দিকে নেওয়া।
এদিকে, এফএফসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাহাজ থেকে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। টেলিগ্রামে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যায়, মানবাধিকারকর্মীরা হাতে উঁচিয়ে বসে আছেন, যা আটক প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত দেয়।
জাহাজটিতে মোট ১২ জন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী ছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সুইডেনের পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গ, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য ও ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, ডাচ নাগরিক মার্কো ফন রেনেস এবং ফ্রান্সের রিভা ভিয়া।
ইসরায়েল গত ২ মার্চ থেকে গাজার জন্য সব ধরনের ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে খাদ্যসংকটে ভুগে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ প্রেক্ষাপটে মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে ১ জুন ইতালির কাতানিয়া থেকে 'ম্যাডলিন' যাত্রা শুরু করে।
ফ্লোটিলা সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাহাজটিতে গাজার জন্য জরুরি সহায়তা ছিল। এসবের মধ্যে ছিল চিকিৎসাসামগ্রী, চাল, ময়দা, শিশুদের দুধ, ডায়াপার, নারীদের স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট, ক্রাচ এবং শিশুদের কৃত্রিম অঙ্গ। গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি এখন তীব্র খাদ্যসংকটে দিন কাটাচ্ছে বলে জানায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা।
'ম্যাডলিন' নামটি গাজার প্রথম ও একমাত্র নারী মৎস্যজীবী মাদেলিন কলাবের নাম অনুসারে রাখা হয়েছে। জাহাজটি যেন ইসরায়েলের জলসীমায় প্রবেশ না করে, সে বিষয়ে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
Comments