নিরাপত্তা শঙ্কায় পাকিস্তান ছাড়তে চান শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা
মঙ্গলবার পাকিস্তানের মাটিতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। রোমাঞ্চকর সেই ম্যাচেতে স্বাগতিকদের জয়ের পর তারা নতুন অনিশ্চিয়তায় পড়েছে। মঙ্গলবার ইসলামাবাদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ৩০ জন। ফলে নিরাপত্তা শঙ্কায় কয়েকজন লঙ্কান ক্রিকেটার সিরিজের মাঝপথেই দেশটি ছাড়তে চান। তবে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছে তাদের ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)।
আগামীকাল (শুক্রবার) সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে। কিন্তু সফরকারী শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের কেউ কেউ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছে এসএলসি। যে কারণে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মাঝে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে যথাযথ নিরাপত্তার আশ্বাস পাওয়ায় লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড ক্রিকেটারদের সূচি মেনে খেলা এবং কেউ দেশে ফিরতে চাইলে তার রিপ্লেসমেন্ট পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে এসএলসি জানিয়েছে, 'নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে বুধবার সকালে টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে কয়েকজন ক্রিকেটার পাকিস্তানে চলমান সফর থেকে দেশে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসে, সকল উদ্বেগের বিষয়টি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করা হয়েছে। এখানে সফররত প্রত্যেক ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।'
সে হিসেবে চলমান সফর নির্ধারিত সূচিতে চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে ফিরতে চাওয়া ক্রিকেটারদের নিয়ে বিকল্প ভাবনাও জানিয়েছে এসএলসি। লঙ্কান বোর্ড জানিয়েছে, 'সকল ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ ও টিম ম্যানেজমেন্টকে সূচি অনুসারে সফর সম্পন্ন করার আহবান জানাচ্ছে এসএলসি। এরপর কোনো খেলোয়াড় কিংবা সাপোর্ট স্টাফের সদস্য যদি দেশে ফিরতে চায়, পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আবার কেউ সফর রেখে দেশে ফিরলে তাৎক্ষণিকভাবে তার রিপ্লেসমেন্ট পাঠিয়ে বিঘ্ন ছাড়াই সফর সম্পন্ন করা হবে।'
২০০৯ সালে লাহোরে সন্ত্রাসী হামলার দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল। এর জেরে দীর্ঘ সময় পাকিস্তানে কোনো বাইরের দেশ খেলতে যায়নি। আবারও যখন শ্রীলঙ্কা দল দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে, তখন আবার দেশটিতে বোমা হামলার ঘটনা ঘটল। এই ঘটনায় অন্তত ১২ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া ভিন্নমতাবলম্বী গোষ্ঠী জামা-উল-আহরার এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এর আগে পিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছেন, 'পিসিবি সভাপতি মহসিন নাকভি সশরীরে স্টেডিয়াম গিয়েছেন এবং সফরকারী দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন যে তারা নিরাপদে থাকবে। পাকিস্তানি আর্মি ও প্যারামিলিটারি রেঞ্জার্সের সঙ্গে নিরাপত্তার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। সফরকারী খেলোয়াড় ও অফিসিয়ালদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে তারা কাজ করে যাবেন।'
প্রসঙ্গত, প্রথম ওয়ানডেতে ৬ রানে হেরেছে শ্রীলঙ্কা। তিনটি ওয়ানডে খেলে দুই দল জিম্বাবুয়েকে নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে ১৭ থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত। কোনো কারণে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ব্যাঘাত ঘটলে, পরবর্তী ত্রিদেশীয় সিরিজও অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে।
Comments