ঢাকায় রুশ জনগণের গণ-কূটনীতির শতবর্ষ এবং বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন
৫ ডিসেম্বর রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকা আয়োজন করে এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক কনসার্ট, যা অনুষ্ঠিত হয় রুশ জনগণের গণ-কূটনীতির ১০০ বছর এবং বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে। ঢাকার মুক্তমঞ্চ "রবীন্দ্র সরোবর"-এ অনুষ্ঠিত এ উৎসবে হাজার হাজার দর্শক অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে ছিল বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক দলগুলোর পরিবেশনা—শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা, জনপ্রিয় ব্যান্ড সোনার বাংলা সার্কাস, এবং সংগীতশিল্পী দল আকাশ অ্যান্ড কো.। তারা পরিবেশন করেন রুশ ও বাংলা সংগীতের ঐতিহ্যবাহী এবং সমসাময়িক উপস্থাপনা।
ঐতিহাসিক বন্ধন ও আধুনিক সেতুবন্ধন
সন্ধ্যার অনুষ্ঠানটি দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতাকে আরও একবার তুলে ধরে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের কূটনৈতিক ও কৌশলগত সহায়তা—জাতিসংঘে ভেটো প্রয়োগ থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা—বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়।
আজ এই বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী হয়েছে সোভিয়েত ও রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা ৬, হাজারের বেশি বাংলাদেশি পেশাজীবীর মাধ্যমে, যারা বাংলাদেশের অর্থনীতি, জ্বালানি খাত, বিজ্ঞান ও প্রশাসনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দেশে বসবাসরত রুশ প্রবাসীরাও তরুণ প্রজন্মের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন—রাশিয়ার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আধুনিক প্রযুক্তি খাতে পেশাগত সম্ভাবনার সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী তরুণ বীরদের প্রতি অনুষ্ঠানটিতে বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়—যাদের সাহস ও আত্মদান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তি স্থাপন করে।
উপস্থিত আলোচনায় আধুনিক কৌশলগত অংশীদারত্বের একটি উজ্জ্বল প্রতীক হিসেবে রোসাটম স্টেট কর্পোরেশনের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কথাও গুরুত্বসহ তুলে ধরা হয়। ২,৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই কেন্দ্র বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিকে স্থিতিশীল জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে এবং এর সাথে যুক্ত রয়েছে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও জাতীয় জনশক্তি উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি।
Comments