বেশি ভিটামিন ডি খেয়ে বিপদ ডাকছেন না তো?

শরীরের জন্য ভিটামিন ডি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি হাড়, দাঁত এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ করে থাকে। এছাড়াও নানা ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি গ্রহণ করা ঠিক নয়।
ভিটামিন ডি উপকারী হওয়ায় অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে এবং রক্ত পরীক্ষা ছাড়া ইচ্ছামত সাপ্লিমেন্ট হিসেবে এটি গ্রহণ করেন। কিন্তু তারা জানেন না, এভাবে সাপ্লিমেন্ট নেয়ার কারণে নিজের অজান্তেই কিডনির মতো সংবেদনশীল অঙ্গের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছেন তারা। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চেন্নাইয়ের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ নেফ্রোলজি অ্যান্ড ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক নভিনাথ এম বলেছেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের পর থেকে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ অনেকটাই হুজুগে পরিণত হয়েছে। ফলে কিডনির বিপদ হচ্ছে। শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, কিডনিকে জোর করে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ফিল্টার করতে বাধ্য করে থাকে ভিটামিন ডি। যা দীর্ঘদিন চলার কারণে কিডনির টিস্যুতে ক্যালসিয়াম জমতে থাকে। পরবর্তীতে সেসব পাথরে রূপান্তর হয়। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় 'নেফ্রোক্যালসিনোসিস'। রক্তে ভিটামিন ডি'র মাত্রা যদি বেড়ে যায়, তাহলে কিডনির ফিল্টার করার অংশ বিকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিছু ক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে, কিডনি তার কাজের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।
ভিটামিন ডি কতটুকু প্রয়োজন:
মানবদেহে শারীরবৃত্তীয় কাজ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য সামান্য পরিমাণ (৪০০ থেকে ১,০০০IU) ভিটামিন ডি'র প্রয়োজন হয়। তবে, কোনো ব্যক্তি যদি ৮,০০০ থেকে ১২,০০০ IU পরিমাণ সাপ্লিমেন্ট হিসেবে এটি দীর্ঘদিন গ্রহণ করতে থাকেন, তাহলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
হাড়, দাঁত ভালো রাখতে কিংবা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সাধারণ ৬০,০০০ IU ভিটামিন ডি গ্রহণের পরামর্শ দেন। যা প্রতিদিন গ্রহণের প্রয়োজন হয় না। সপ্তাহে মাত্র একবার গ্রহণ করলেই হয়।
রক্তে ভিটামিন ডি'র পরিমাণ বেশি থাকলে বোঝার উপায়:
রক্তে ভিটামিন ডি'র পরিমাণ বেশি থাকলে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসবে। সারাক্ষণ বমি বমি ভাব থাকবে, কিছুক্ষণ পরপর তৃষ্ণা পাবে, পেশির দুর্বলতা থাকবে, কোমরে ব্যথা, পা ফোলা ও ক্লান্তিবোধ কাজ করবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
Comments