কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় জানুন

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি পরিচিত হজম সংক্রান্ত সমস্যা। এই সমস্যায় কম-বেশি অনেকেই ভুগে থাকেন। হঠাৎ হঠাৎ কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়, তবে নিয়মিত এ ধরনের সমস্যা হলে তা উপেক্ষা করা যাবে না। বেশ কয়েকটি কার্যকরী কৌশলের মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে এটি দূর করা যেতে পারে। ফল, শাক-সবজি এবং হোল গ্রেইন ফুডের সঙ্গে ফাইবার গ্রহণ বৃদ্ধি করলে মল নরম হয় এবং অন্ত্রের গতি বৃদ্ধি পায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়-
খাদ্যাভ্যাস
আপনি কি জানেন কোষ্ঠকাঠিন্যের সবচেয়ে বড় শত্রু কে? ফাইবার। ফাইবারের অভাব কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রধান কারণ। ফাইবার মলে আর্দ্রতা যোগ করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে। এটি মলকে নরম করে এবং সহজে বের করে দেয়। তাহলে কীভাবে ফাইবার যোগ করবেন? খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। বেশি বেশি ফল, শাক-সবজি, ডাল এবং হোল গ্রেইন ফুড খাওয়ার চেষ্টা করুন। মল নরম করার জন্য ওটস, আপেল এবং তিসির মতো দ্রবণীয় ফাইবারও খেতে পারেন। অন্যদিকে, অদ্রবণীয় ফাইবার, যেমন গমের ভুসি এবং পাতাযুক্ত শাক-সবজি মলের পরিমাণ বাড়ায় এবং মলত্যাগে সহায়তা করে।
হাইড্রেটেড থাকুন
ডিহাইড্রেশন কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ কারণ। এটি অবস্থা আরও খারাপ করে তোলে, কারণ শরীরে তরলের অভাব হলে কোলন মল থেকে অতিরিক্ত পানি শোষণ করে। এর ফলে মল আরও শক্ত হয়ে যায়, যার ফলে মলত্যাগ যন্ত্রণাদায়ক হয়। সমাধান কী? প্রচুর পানি পান করুন। এটি মল নরম রাখতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিশেষ করে সকালে হালকা গরম পানি পান করলে মলত্যাগ ত্বরান্বিত হতে পারে।
ব্যায়াম করুন
শরীরের সকল কার্যকারিতার জন্য শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যার মধ্যে হজমশক্তিও অন্তর্ভুক্ত। নিয়মিত ব্যায়াম অন্ত্রের কার্যকারিতাকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করবে। এর অর্থ এই নয় যে, আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে ঘাম ঝরিয়ে ফেলতে হবে। দ্রুত হাঁটা, যোগব্যায়াম বা হালকা স্ট্রেচিংয়ের মতো সহজ ব্যায়াম হজমে সহায়তা করে। গবেষণায় ধারাবাহিকভাবে দেখা গেছে যে, ব্যায়াম অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং হজমের উন্নতির জন্য ভালো।
টয়লেট
মনে রাখবেন যে, আমাদের শরীর ধারাবাহিকতার ওপর নির্ভর করে এবং মলত্যাগও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই একটি রুটিন তৈরি করার চেষ্টা করুন। সহজ টিপস, যেমন প্রতিদিন একই সময়ে বাথরুমে যাওয়া, বিশেষ করে খাবারের পরে, আপনার পাচনতন্ত্রকে প্রশিক্ষণ দেবে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, আপনি তাগিদ উপেক্ষা করুন। যদি বাথরুমে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করেন, তাহলে পিছপা হবেন না। কারণ এটি কোষ্ঠকাঠিন্যকে আরও খারাপ করতে পারে।
দ্রুত প্রতিকার
খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যোগ করলে তা কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। আলুবোখারা এবং ডুমুরের মতো খাবার নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন, কারণ এতে ফাইবার ও প্রাকৃতিক যৌগ রয়েছে যা অন্ত্রের গতিবিধিকে উদ্দীপিত করে। এছাড়াও, চিয়া বীজ এবং তিসির বীজ যোগ করুন। ভিজিয়ে রাখলে এই বীজগুলো জেলের মতো গঠন তৈরি করে যা মল নরম করতে সাহায্য করে। যা মলত্যাগ সহজ করে।
Comments