যেসব ভুল অভ্যাস শুধরে নিলে ওজন কমানো সম্ভব

অনেকেই মনে করেন ওজন নিয়ন্ত্রণে আনা মানেই জিমে ঘাম ঝরানো বা কঠোর ডায়েট। তবে বাস্তবে এমন নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন আমরা প্রতিদিন এমন কিছু অভ্যাসের মধ্যে দিয়ে যা ওজন নিয়ন্ত্রণের যাত্রা কঠিক করে দেয়। কখনো কখনো আমরা এমন কিছু অভ্যাস অনুসরণ করি যেগুলো স্বাস্থ্যকর বলে মনে হলেও, বাস্তবে তা আমাদের ফ্যাট লসের প্রক্রিয়াকে থামিয়ে দেয়। ভারতের অনলাইন ফিটনেস কোচ আরজার বেদি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।
হিন্দুস্তান টাইমস থেকে জানা যায়, ফিটনেস কোচ আরজার বেদি ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে কয়েকটি দিক তুলে ধরেছেন। তিনি জানান নিয়মিত অনুশীলন ও সচেতন জীবনধারায় ওজন কমিয়েছেন ১০ কেজি। ইনস্টাগ্রামে নিজের ফিটনেস জার্নির নানা অভিজ্ঞতা, ভুল সিদ্ধান্ত এবং কার্যকর কৌশলগুলো তিনি শেয়ার করেন অনুসারীদের সঙ্গে। সম্প্রতি তিনি এমন ১০টি অভ্যাসের তালিকা প্রকাশ করেছেন, যেগুলো শুরুতে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও তার ওজন কমানোর পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ওজন কমানোর পথে বাধা হতে পারে যেসব অভ্যাস
১. শুধু ফল খেয়ে দিন শুরু করা: শরীর হালকা লাগলেও রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়, যার ফলে দুপুরের মধ্যেই প্রবল ক্ষুধা ও ক্রেভিং শুরু হয়।
২. সারা দিন খুব কম খেয়ে রাতের বেলা বেশি খাওয়া: শৃঙ্খলাপূর্ণ মনে হলেও এতে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না, ফলে বেশি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে এবং ওজন কমানো ব্যাহত হয়।
৩. প্রতিদিন সকালের খাবারে ওটস ও পিনাট বাটার খাওয়া: ফিটনেস-ফ্রেন্ডলি মনে হলেও এটি ক্যালরি সমৃদ্ধ, এবং খুব বেশি সময় পেট ভরা রাখে না।
৪. প্রোটিন বার ও ট্রেইল মিক্স খাওয়া: সহজ ও উচ্চ প্রোটিন হলেও বেশি খাওয়ার ফলে ক্যালরি বেড়ে যায়, আর এগুলো খুব একটা তৃপ্তিও দেয় না।
৫. স্মুদি খাওয়া: স্মুদি খাওয়া স্বাস্থ্যকর মনে হলেও এতে ক্যালরি পানীয়র মাধ্যমে গ্রহণ হয়, ফলে দ্রুত ক্ষুধা লাগে এবং স্ন্যাক খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
৬. অতিরিক্ত ব্যায়াম: দ্রুত ওজন কমাতে অতিরিক্ত ব্যায়াম করা একেবারেই ঠিক না। অতিরিক্ত ব্যায়াম করার অভ্যাস এক সময় মানসিক চাপ চাপ সৃষ্টি করে তাই নিয়ম মেনে নিয়মিত ব্যায়াম করাই ভালো।
৭. কার্বোহাইড্রেট পুরোপুরি বাদ দেয়া: কার্ব না খেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, পেশি নষ্ট হতে পারে, যা ওজন কমানোর বদলে শরীরের ক্ষতি করে।
৮. নিয়মিত 'হেলদি' ডেজার্ট বেক করা: চিনি না থাকলেও এতে ক্যালরি থাকে। আর মিষ্টির প্রতি লোভ বজায় থাকে, যা নিয়ন্ত্রণ কঠিন করে তোলে।
৯. ব্যায়াম করার পরেও মাত্র ৫ ঘণ্টা ঘুম: ঘুম না হলে শরীর পুরোপুরি রিকভার হয় না। ওজন কমাতে ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
১০. প্রতিদিন ওজন মাপা ও স্কেলের প্রতি আসক্তি: ওজন প্রতিদিন ওঠা-নামা করে, যা মনোবল ভেঙে দেয়। সত্যিকারের অগ্রগতি বোঝা যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, স্কেলের নয়।
ওজন কমানো কেবল ডায়েট বা জিমে ঘাম ঝরানোর বিষয় নয়, এটি একটি সচেতন জীবনধারা গঠনের যাত্রা। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে সবার আগে বুঝতে হবে কোন অভ্যাস বাদ দিতে হবে আর কোনটা গ্রহণ করতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মানার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে কারণ সে আপনাকে সঠিক উপায় জানাতে পারবে।
Comments