প্রতিদিন কত কদম হাঁটলে সুস্থ থাকা যাবে

সুস্থ থাকতে হাঁটা দারুণ উপকারী। তবে ঠিক কত সময় কিংবা কত স্টেপ বা কদম হাঁটবেন সেটা অনেকেই জানেন না। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। দিনে মাত্র ৭ হাজার কদম হাঁটলেই মারাত্মক সব রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। 'দ্য ল্যানসেট পাবলিক হেলথ' জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দিনে ৭ হাজার কদম হাঁটলে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। যেখানে এতদিন ধরে স্বাস্থ্য সচেতনদের উদ্দেশে বলা হতো, ১০ হাজার কদম হবে, সেখানে এই গবেষণা বলছে সর্বোচ্চ সুফল মেলে ৭ হাজার কদম হাঁটলেই। এর বেশি হাঁটলে উপকার থাকলেও তা আগের মতো নাটকীয় নয়।
এই তথ্য এসেছে বিশ্বের ১৬০ হাজার মানুষের ওপর পরিচালিত ৫৭টি পূর্ববর্তী গবেষণার বিশ্লেষণ থেকে। গবেষকরা দেখেছেন, যারা দিনে ২ হাজার কদম হাঁটেন তাদের তুলনায় যারা ৭ হাজার কদম, তাদের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৭ শতাংশ কম। শুধু তাই নয়, এতে আরও জানা যায়—
> ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে ৩৮ শতাংশ
> বিষণ্নতা কমে ২২ শতাংশ
> টাইপ-২ ডায়াবেটিস কমে ১৪ শতাংশ
> এছাড়া হাঁটার অভ্যাস ক্যানসার ও পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া রোধেও সাহায্য করতে পারে বলে আভাস মিলেছে, যদিও এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণাটির সহলেখক ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল রিসার্চার প্যাডি ডেম্পসি বলেন, আপনাকে ১০ হাজার কদম হাঁটার জন্য চাপ নেয়ার দরকার নেই। বড় স্বাস্থ্য সুফল আসলে ৭ হাজার কদমই যথেষ্ট। তবে তিনি এটাও বলেন, যারা এর চেয়ে বেশি হাঁটছেন তারা যেন অভ্যাস চালিয়ে যান। আর যারা মাত্র ২ হাজার বা ৩ হাজার কদম, তারা প্রতিদিন ধাপে ধাপে আরও ১ হাজার কদম বেশি হাঁটার চেষ্টা করুন। এটা করতে আপনার মাত্র ১০-১৫ মিনিট হালকা হাঁটা যথেষ্ট।
চলাফেরার গতির ওপর নির্ভর করে সংখ্যাটি ভিন্ন হতে পারে, তবে গড়ে এক ঘণ্টা হেঁটে আপনি এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন। অফিসে যাওয়ার পথে বাস থেকে একটু আগেই নেমে হাঁটা, সিঁড়ি ব্যবহার করা কিংবা খাবার পর হালকা হাঁটাহাঁটি করেও এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি থেকে তীব্র মাত্রার শারীরিক কসরত করা উচিত। তবে তাদের তথ্য বলছে, পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ মানুষই এই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ। হাঁটা একটি সহজ, ঝুঁকিহীন এবং সবার জন্য উপযোগী ব্যায়াম। ব্যস্ত সময়ের মাঝেও কয়েক মিনিট হাঁটার সুযোগ খুঁজে নেয়া কঠিন কিছু নয়। নিজের শরীর ও ভবিষ্যতের জন্য এই সামান্য পরিবর্তন আনলেই হতে পারে বড় সুফল।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
Comments