ফ্যাটি লিভার থেকে রক্ষা পেতে পারেন যেভাবে

বিশ্বজুড়ে এক বিপজ্জনক স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ফ্যাটি লিভার, বিশেষ করে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বা এনএএফএলডি। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, প্রতি তিনজন প্রাপ্তবয়স্কের একজনের শরীরেই এই রোগের উপস্থিতি রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে এই হার প্রায় ৪০ শতাংশ, আর নারীদের মধ্যে ২৬ শতাংশ।
তবে আশার কথা সময়ের আগে ধরা পড়লে এই রোগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অনেকাংশে বিপরীতমুখী করাও সম্ভব। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু কিছু সহজ লাইফস্টাইল পরিবর্তনই এই রোগ প্রতিরোধে ও চিকিৎসায় প্রধান ভূমিকা রাখতে পারে। নিচে জেনে নিন এমনই ছয়টি বিজ্ঞানসম্মত কৌশল।
চিনি বাদ দিন
অতিরিক্ত চিনি, বিশেষ করে ফ্রুকটোজ (যা টেবিল সুগার ও হাই-ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপে থাকে) লিভারে চর্বি জমার অন্যতম কারণ। এটি ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সও বাড়িয়ে দেয়, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ও লিভার ক্ষয় উভয়ই বাড়ায়।
করণীয়
* কোলা, ফলের জুস, মিষ্টান্ন, ক্যান্ডি জাতীয় খাবার বাদ দিন
* প্রতিদিন ফল খান, তবে পরিমিত পরিমাণে এবং সম্পূর্ণ ফলের আকারে
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করুন
দিনে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে সব খাবার খেয়ে নিন এবং বাকি সময় উপবাসে থাকুন। এতে শরীরে অটোফ্যাগি নামে পরিচিত কোষ পরিষ্কারের প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়, যা লিভারের ক্ষয় প্রতিরোধ করে।
উপকারিতা
* ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে
* গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে
* ফ্যাট মেটাবলিজম ভালো হয় তবে এই অভ্যাস সবার জন্য উপযোগী নয়। তাই শুরু করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
শুধু ব্যায়াম করেই এনএএফএলডি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সপ্তাহে ৩ দিন ভারোত্তোলন (স্ট্রেংথ ট্রেনিং), ৩ দিন কার্ডিও (দ্রুত হাঁটা, দৌড়, সাঁতার ইত্যাদি), প্রতিদিন ৮,০০০–১০,০০০ পা হাঁটা এই অভ্যাস ইনসুলিন কার্যকারিতা উন্নত করে এবং লিভারে জমা চর্বি কমায়।
খাদ্য তালিকায় প্রোটিন ও ফাইবার যোগ করুন
প্রোটিন ক্ষুধা কমিয়ে অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করে এবং ফাইবার হজম ও পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে। খাবার তালিকায় রাখুন ডিম, মুরগি, মাছ, ওটস, ব্রকলি, চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্সসিড।
পরিশোধিত কার্ব বাদ দিন
রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট দ্রুত রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়ায় এবং ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ায়। চিপস, পাউরুটি, পেস্ট্রি বাদ দিন। ব্রাউন রাইস, কুইনোয়া, মিষ্টি আলু, অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল, বাদামজাতীয় স্বাস্থ্যকর চর্বি।
ওজন কমান
অতিরিক্ত ওজন এনএএফএলডি-এর প্রধান কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৫–১০% ওজন কমলেই লিভারে চর্বির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। ধীরে ধীরে ওজন কমান এবং দীর্ঘস্থায়ী খাদ্য ও ব্যায়াম পরিকল্পনা নিন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
Comments