ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কা

হাসপাতালের ভেতরে রোগীর চাপ আর বাইরে মশার দৌরাত্ম্য—এই দুই মিলে ডেঙ্গু এখন বড় উদ্বেগের নাম। সংক্রমণ গত বছরের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেড়ে গেছে, মৃত্যুহারও দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়ন্ত্রণে পুরনো কর্মসূচি যথেষ্ট নয়। তাই এখন দরকার নতুন পদক্ষেপ, জনসম্পৃক্ততা আর সম্মিলিত উদ্যোগ। নইলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, শয্যাশায়ী রোগীর পাশে উদ্বিগ্ন স্বজনদের দীর্ঘশ্বাস। এডিসের কামড়ে শুরু হওয়া জ্বর এখন আতঙ্ক সবার কাছে। গত বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্তের হার প্রায় তিনগুণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী থেকে শুরু করে বিভাগীয় শহর পর্যন্ত এডিসের বংশবিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না।
চলতি বছর বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তবে মৃত্যুহার তুলনামূলক কম। রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মৃত্যুহার এক দশমিক দুই শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যুহার বাংলাদেশে। কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, বৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরম, এই দুই মিলেই এডিস মশার প্রজননের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। মশক নিধনে জনসম্পৃক্ততা জরুরি। প্রান্তিক পর্যায়ে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা আরও বাড়তে পারে- তাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ তাদের।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল ইসলাম বলেন, 'ঢাকায় অনেকই ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে এডিস মশার আবাসস্থলকে কেন্দ্র করে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যারা স্প্রে বা ফগ মেশিন চালান, তাদেরকে প্রশিক্ষিত করতে হবে।'
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আবহাওয়ার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
Comments